Advertisement
০৫ মে ২০২৪
স্টেশন এলাকায় রমরমিয়ে বেআইনি মদ-গাঁজার ব্যবসা

রাত নামলেই আসর বসে উত্তরপাড়ায়

রাত হলে হুগলির নানা স্টেশন হয়ে ওঠে নেশার ঠেক! মদ, গাঁজা থেকে নেশার সামগ্রীর বিকিকিনি চলে দেদার। কী ভাবে? খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ উত্তরপাড়া।রাত হলে হুগলির নানা স্টেশন হয়ে ওঠে নেশার ঠেক! মদ, গাঁজা থেকে নেশার সামগ্রীর বিকিকিনি চলে দেদার।

সুনসান: রাত তখন দশটা। উত্তরপাড়া স্টেশনে দেখা মিলল না আরপিএফ বা জিআরপি-র। ছবি: দীপঙ্কর দে

সুনসান: রাত তখন দশটা। উত্তরপাড়া স্টেশনে দেখা মিলল না আরপিএফ বা জিআরপি-র। ছবি: দীপঙ্কর দে

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ১২:৫৬
Share: Save:

ছবি এক: রাত সাড়ে দশটা। ব্যান্ডেল লোকাল উত্তরপাড়া স্টেশন ছাড়াল। লে়ডিস কামরা থেকে নামলেন গুলিকয়েক মহিলা যাত্রী। এক আরপিএফ জওয়ান স্টেশনে লেডিস বগির সামনে কংক্রিটের সিটে বসে রয়েছে। ঝিমধরা রেলের আলোয় রাত বাড়ে উত্তরপাড়া স্টেশনে।

ছবি দুই: মাখলা থেকে মদ্যপ কয়েকজন যুবক রাতের স্টেশনে ছন্দপতন ঘটায়। বচসা থেকে হাতাহাতি। এই দৃশ্য দেখে ঘরমুখো এক মহিলা রীতিমত শঙ্কিত। তাদের পেরিয়ে স্টেশনের ও প্রান্তে তিনি কী করে যাবেন? কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। স্টেশনের ফল বিক্রেতারা ততক্ষণে বাড়ির পথে। আপ প্ল্যাটফর্মের ফুল বিক্রেতা মহিলাও স্টেশন ছাড়ছেন। দেখা নেই রেল পুলিশের।

বস্তুত বেশি রাতে কাজের তাগিদে নিত্যযাত্রীরা যাতায়াত করলেও উত্তরপাড়া স্টেশন কার্যত এমনই অরক্ষিত। রেলের জিনিস প্রহরা ও মানুষের সুরক্ষায় রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ) ও জিআরপির নজরদারির কথা। কিন্তু রাতে পুলিশের টহল চোখে পড়ে না। এমনকী যাত্রীদের ক্ষোভ রেলচত্বরে আলোর ব্যবস্থা নিয়েও। নিত্যযাত্রীদের ক্ষোভ, ‘‘সন্ধেবেলা তাও সেভাবে সমস্যা হয় না। কিন্তু রাতে তো লোক কমে যায়। তখন ভয় লাগে তো বটেই।’’

উত্তরপাড়া স্টেশন লাগোয়া মাখলায় রেলের জমিতে রমরমিয়ে বেআইনি মদের ব্যবসা চলে বলে অভিযোগ। স্টেশন লাগোয়া অটোস্ট্যান্ডে দু’পা গেলে চোখে পড়ে চট টাঙিয়ে দেদার মদের মৌতাত। সঙ্গে কেরোসিনের কুপি জ্বেলে মদের জন্য থাকে চাটের ব্যবস্থা। প্রকাশ্যে কী ভাবে চলে এসব? জেলা পুলিশের সাফাই, রেল পুলিশের এলাকা। কিচ্ছুটি করার নেই। আর রেল পুলিশের উত্তর, রেলের সম্পত্তি রক্ষাই কাজ। আইন-শৃঙ্খলা জেলা পুলিশের দায়িত্বে।

দু’পক্ষের ঠেলাঠেলিতে বেআইনি কারবারিদেরই রমরমা। পুলিশের দুই দফতরের ব্যবস্থা নেওয়ার অনীহায় মদের কারবার চলে অবাধে। মদের ঠেকে ভিড় করে দুষ্কৃতীরা। রাতে তারা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। উত্তরপাড়া স্টেশনে বড় কাউন্টার হয়ে কাঁঠালবাগানে যাওয়ার পথ পুরো ভাঙা আর ঘোর অন্ধকার। রাতে ওই পথে মহিলারা গেলে ছিনতাই বা অন্য অত্যাচারের ঘটনা ঘটতেই পারে। রেলের নয়নজুলি লাগোয়া গুমটি দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হলে এলাকা ঢাকে অন্ধকারের চাদরে। নিত্যযাত্রীদের প্রশ্ন, স্টেশন ম্যানেজারের সদিচ্ছা নিয়েও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE