করোনা সংক্রমণে কিছুটা লাগাম পরল হাওড়া জেলায়।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া গত দু’সপ্তাহের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে। আক্রান্তের সংখ্যা কমার সঙ্গে সুস্থ হওয়ার হারও বাড়ছে। আরও বেশি করে আক্রান্তকে সুস্থ করা এবং মৃত্যুর হার কমানোর জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফথরের কর্তারা জানিয়েছেন।
কী বলছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট? ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩০ মে থেকে ৫ জুন— এই সাত দিনে জেলায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪১০। সেখানে ৬ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৩।
কমেছে দৈনিক গড় সংক্রমণের সংখ্যাও। ৩০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত যেখানে গড়ে দৈনিক ৫৮ জন করে সংক্রমিত হয়েছেন, সেখানে ৬ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত এই হার গড়ে ৩৬ জন। তবে, এই পর্বের শেষের দু’দিন আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়ায়।
মৃত্যুর সংখ্যা অবশ্য দু’টি সপ্তাহে একই ছিল। ৩০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত মারা গিয়েছিলেন ১১ জন। ৬ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্তও ১১ জন আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে।
তবে, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, যে হেতু দ্বিতীয় সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা কম, সেই নিরিখে ধরলে এই সপ্তাহে আক্রান্তের অনুপাতে মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা বেশি। আগামী দিনে মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমিয়ে আনাই তাঁদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
সুস্থ হওয়ার নিরিখেও ক্রমশ উন্নতি দেখা গিয়েছে। ৩০ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত সুস্থ হন ৬৯ জন। সেখানে ৬ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত এই সংখ্যা ৮৪। এই হার বেশ স্বস্তিদায়ক বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
কেন কমছে আক্রান্তের সংখ্যা?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, ১৭ মে থেকে হাওড়ায় পরিযায়ী শ্রমিকদের আসা শুরু হয়। নতুন সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে থাকে তাঁদের মধ্যেই। এই দু’সপ্তাহে পরিযায়ী শ্রমিকের আসা অনেকটা কমেছে। ফলে, তাঁদের মধ্যে থেকে সংক্রমণের ঘটনাও কমছে। ৬ জুন পর্যন্ত আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৩০১ জন। ১২ জুন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩২১ জনে। অর্থাৎ, মাত্র ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যা তার আগের কয়েক সপ্তাহের চেয়ে অনেকটা কম। তারই প্রতিফলন ঘটেছে এই ৬ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত নতুন আক্রান্তের মোট সংখ্যায়। তবে, এই পর্বের শেষ দু’দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।