Advertisement
E-Paper

হাওড়ার উন্নয়নে সঙ্গী হতে আগ্রহী জাপান

শুধু জাপানের ইয়োকোহামার আদলে হাওড়াকে সাজানোই নয়, এই শহরের উন্নয়নেও আগ্রহ দেখালেন জাপানের কনসাল জেনারেল মাচাউকি তাগা। জানালেন, আরও বড় মাত্রায় তাঁদের দেশের বিভিন্ন শিল্প, প্রযুক্তি সংস্থার বিনিয়োগের মাধ্যমে হাওড়ায় শিল্পের উন্নয়নের সুযোগ আছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৩
হাওড়া পুরসভায় মেয়র রথীন চক্রবর্তীর সঙ্গে কলকাতায় জাপানের কনসাল জেনারেল। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র

হাওড়া পুরসভায় মেয়র রথীন চক্রবর্তীর সঙ্গে কলকাতায় জাপানের কনসাল জেনারেল। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র

শুধু জাপানের ইয়োকোহামার আদলে হাওড়াকে সাজানোই নয়, এই শহরের উন্নয়নেও আগ্রহ দেখালেন জাপানের কনসাল জেনারেল মাচাউকি তাগা। জানালেন, আরও বড় মাত্রায় তাঁদের দেশের বিভিন্ন শিল্প, প্রযুক্তি সংস্থার বিনিয়োগের মাধ্যমে হাওড়ায় শিল্পের উন্নয়নের সুযোগ আছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছায় ‘বেলুড় শিল্পতীর্থ’ তৈরির জন্য দু’টি জমি-সহ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিল্পের অন্য পরিকাঠামো বুধবার ঘুরে দেখেন কনসাল জেনারেল।

এ দিন লিলুয়া ও বেলুড়ের জমি দু’টি দেখার পরে মাচাউকি তাগা বলেন, ‘‘জমি দু’টি শিল্পের জন্য উপযুক্ত বলেই মনে হয়েছে। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী নই। পুরো বিষয়টি জাপান প্রশাসন এবং সেখানকার ব্যবসায়ী মহলে জানাব।’’ হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধু ইয়োকোহামার আদলের শহর নয়, এখানকার সব পরিকাঠামো দেখে কনসাল জেনারেল খুবই খুশি হয়েছেন। তাই জাপানের সমস্ত রকমের শিল্প-প্রযুক্তি সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে হাওড়া উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’ মেয়র আরও জানান, জাপানের সব থেকে বড় লগ্নিকারী সংস্থা যাতে হাওড়ায় শিল্পে বিনিয়োগ করে, তার জন্যও আলোচনা করবেন বলে জানান কনসাল জেনারেল।

লিলুয়া ও বেলুড়ের পরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর আরও শিল্প গড়ে তোলার সম্ভবনার দিকটিও তাঁরা খতিয়ে দেখবেন বলে মেয়রকে জানিয়েছেন কনসাল জেনারেল। রথীনবাবু বলেন, ‘‘জাপানের লগ্নিকারীদের সঙ্গে হাওড়ার শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের মত বিনিময়ের জন্য শিল্প সম্মেলন করার অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি তাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’’

গত জানুয়ারিতেই মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছার ‘বেলুড় শিল্পতীর্থ’-র বিষয়ে আলোচনার জন্য রথীনবাবুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কনসাল জেনারেল। বৈঠকের পরে তিনি বেলুড় শিল্পতীর্থের জমি নিজে ঘুরে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই মতো এ দিন বেলুড় শিল্পতীর্থের জমি দেখতে আসেন তিনি। তাঁর সঙ্গে হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী, মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, লক্ষ্মীরতন শুক্ল ছাড়াও ছিলেন পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা, অরুণ রায়চৌধুরী, গৌতম চৌধুরী, বাণী সিংহ রায়, হাওড়া উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান সুলতান সিংহ-সহ অন্যরা।

সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রথমে কনসাল জেনারেল লিলুয়ার পিঁজরাপোল সোসাইটির ২৫০ একর জমি দেখতে যান। ওই জমি দিয়েই বিদ্যুতের হাই ভোল্টেজ তার গিয়েছে। শিল্পের কাজ করতে গিয়ে সেগুলি নিয়ে সমস্যা হবে কি না, তা জানতে চান কনসাল জেনারেল। মেয়র তখনই তাঁকে জানিয়ে দেন, কারখানার জন্য যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন, তা রেখে বাকি হাই ভোল্টেজ কেব্‌ল ও স্তম্ভ সরিয়ে দেওয়া হবে। কোনও সমস্যা হবে না। রাজ্য সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করবে। এর পরে বেলুড়ের বন্ধ নিস্কো কারখানার ১২০ একর জমি দেখেন কনসাল জেনারেল।

বেলুড় স্টেশনের পাশের ওই জমি দেখার সময়ে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র রথীন চক্রবর্তী ও বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়ার কাছ থেকে প্রতিটি বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নেন কনসাল জেনারেল। তাঁকে জানানো হয়, লিলুয়া পিজরাপোল ও বেলুড়ের নিস্কো কারখানার মধ্যে সংযোগকারী একটি রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও লিলুয়া ও বেলুড়ের জমি থেকে ছ’নম্বর জাতীয় সড়ক মাত্র আড়াই কিমি। আবার বেলুড় নিস্কো থেকে সরাসরি জিটি রোড মাত্র ৩০০ মিটার। বিমানবন্দর থেকেও আসা গাড়িও দুই নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মাত্র দেড় কিমি এলেই নিস্কোতে পৌঁছতে পারবেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্ত খুঁটিনাটিই এ দিন জেনে লিখে নেন কনসাল জেনারেল।

পাশাপাশি তাঁকে আরও জানানো হয়, নিস্কোর ওই জামি লাগোয়াই রেল স্টেশন, কিছুটা দূরেই রয়েছে গঙ্গা। সড়কের পাশাপাশি রেলপথ ও জলপথ কাছে হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন জাপানের কনসাল জেনারেল। এমনকী শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই নয়, হাওড়ার এই জমিতে অটোমোবাইল শিল্পও গড়ে তুলতেও আগ্রহ দেখান তিনি। আবার হাওড়া ও সাঁত্রাগাছি— এই দু’টি জায়গায় বিভিন্ন সড়ক, রেল ও জল পথের ব্যবস্থা রয়েছে। তাই ওই দু’টি জায়গাকে কেন্দ্র করে শিল্পাঞ্চল তৈরিতে আগ্রহী কনসাল জেনারেল।

রাজীববাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছার শিল্পতীর্থ তৈরির জন্য জমি-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো দেখে খুশি কনসাল জেনারেল। তিনি জাপানের ব্যবসায়ী মহলে পুরো বিষয়টি জানাবেন। আশা করি খুব শীঘ্রই জাপানের বিনিয়োগে হাওড়া শেফিল্ডের তকমা ফিরে পাবে।’’

Japan Howrah development Contract
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy