Advertisement
E-Paper

কাজ করেও টাকা নেই, ক্ষোভ হাওড়ায়

বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া-সহ কয়েকটি জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে বহু টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কাজ শেষেও গত দু’মাস ধরে টাকা পাচ্ছেন না হাওড়ার ১৫৭টি পঞ্চায়েতের একশো দিন প্রকল্পের জবকার্ডধারীরা। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এক একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গড়ে কুড়ি লক্ষ টাকা করে বকেয়া রয়েছে। আর তার জেরে হাওড়া জেলায় প্রায় থমকে গিয়েছে একশো দিনের প্রকল্পের কাজ। সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কেন্দ্রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’’

বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া-সহ কয়েকটি জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে বহু টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের খামখয়ালিপনা ছাড়া কিছু নয়।’’

একশো দিনের প্রকল্পে কাজ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় জব কার্ডধারীদের মজুরি পেয়ে যাওয়ার কথা। আগে নিয়ম ছিল, পঞ্চায়েত থেকে কাজের পরিকল্পনা পাঠাতে হতো ব্লকে। ব্লক প্রশাসন প্রকল্পটি অনুমোদন করে তা পঞ্চায়েতে পাঠাত। সেই সঙ্গে যত টাকার প্রকল্প সেই টাকাও পঞ্চায়েতকে দিয়ে দেওয়া হতো। পঞ্চায়েত কাজ শেষ হওয়ার পর জবকর্ডধারীদের টাকা দিত।

বছর তিনেক হল সেই নিয়মে বদল এসেছে। এখন পঞ্চায়েত বা ব্লকের তরফে জবকার্ডধারীদের কোনও টাকা দেওয়া হয় না। কোনও একটি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট পোর্টাল ব্যবহার করে পঞ্চায়েত টাকার জন্য আবেদন করে। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার (এফটিও)। কেন্দ্রীয় সরকার সেই এফটিও-র ভিত্তিতে সরাসরি মজুরদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। জবকার্ডধারীরা ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা তুলে নেন। পঞ্চায়েতগুলির পক্ষ থেকে এফটিও পাঠানোর ১৫ দিনের মধ্যে জবকার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টে টাকা আসার কথা। অথচ গত দু’মাস ধরে হাওড়ার বিভিন্ন পঞ্চায়েতের একশো দিনের প্রকল্পের শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

ডিসেম্বর মাস জুড়ে জেলায় পঞ্চায়েতগুলির বার্ষিক গ্রামসভা হয়েছে। আর সেখানেই প্রশাসনিক কর্তাদের সামনে পঞ্চায়েত প্রধানেরা একশো দিনের প্রকল্পে টাকা বকেয়া থাকার সমস্যা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগনান-২ ব্লকের ওড়ফুলি পঞ্চায়েতে বকেয়া রয়েছে অন্তত এক কোটি টাকা। এই ব্লকেরই মুগবেনাপুর পঞ্চায়েতে বকেয়া প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা। শ্যামপুর-১-এর ডিঙাখোলা পঞ্চায়েতে বকেয়া কুড়ি লক্ষ টাকা। আমতা-১-এর কানপুর পঞ্চায়েতে বকেয়া প্রায় পঁচিশ লক্ষ টাকা। এই ব্লকেরই রসপুরে বকেয়া প্রায়
১০ লক্ষ টাকা।

ওড়ফুলির পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীকান্ত সরকার বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে এমন সমস্যা চলছে। তাই গ্রামসভায় বড় বড় মাথাদের সামনেই বিষয়টা জানালাম।’’ কানপুরের প্রধান নাসিম তরফদারের অভিযোগ, ‘‘পুজোর পর থেকে একটা টাকাও আসেনি। মজুরদের কাছে রোজ জবাবদিহি করতে হচ্ছে।’’ আর টাকা না আসায় থমকে গিয়েছে নতুন কাজ।

সম্প্রতি আমতায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়। নারিট মোড়ে নওপাড়া পঞ্চায়েতের জবকার্ডধারী কয়েকজন মহিলা টাকা না পাওয়ার সমস্যা জানিয়ে মুকুল রায়ের সামনেই বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায়ের অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকারকে জব্দ করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার একশো দিনের প্রকল্পে ইচ্ছা করে টাকা দিচ্ছে না।’’ তবে বিজেপির গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিকের সাফাই, ‘‘যে সব প্রকল্পের টাকা আগে পাওয়া গিয়েছে তার হিসাবই দিতে পারেনি রাজ্য সরকার। তাই ওই টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে।’’

100 days work Labours Agitation Wages
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy