Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
অভিযুক্ত আরও ২

বেলুড়ে হাতেনাতে ধৃত ‘তোলাবাজ’ নেতা

তোলাবাজির অভিযোগ এ বার বেলুড়ের তিন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। যাঁদের মধ্যে এক জন প্রাক্তন ব্লক সম্পাদক, অন্য জন প্রাক্তন যুব সভাপতি। রবিবার স্থানীয় এক প্রোমোটারের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ হাতেনাতে ধরে প্রাক্তন ব্লক সভাপতিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০১:৫১
Share: Save:

তোলাবাজির অভিযোগ এ বার বেলুড়ের তিন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। যাঁদের মধ্যে এক জন প্রাক্তন ব্লক সম্পাদক, অন্য জন প্রাক্তন যুব সভাপতি। রবিবার স্থানীয় এক প্রোমোটারের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ হাতেনাতে ধরে প্রাক্তন ব্লক সভাপতিকে।

এ দিন দুপুরে খোকন খাঁড়া নামে ওই প্রোমোটার বেলুড় থানায় খবর দেন, তাঁর নির্মীয়মাণ আবাসনে গিয়ে দাবি মতো ‘তোলা’ না দিলে পরে বুঝে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ওই তিন নেতা ও তাঁদের দুই সঙ্গী। এর পরেই ঘটনাস্থলে চলে যায় পুলিশ। বাকিরা পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যান সুরেশকুমার মণ্ডল ওরফে ছোটু। খোকনবাবুর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্ত অশোক সাউ ও টিঙ্কু মণ্ডলের খোঁজ চলছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলুড়ের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিবচন্দ্র স্ট্রিটে ওই আবাসন বানাচ্ছেন খোকনবাবু। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই ভয় দেখিয়ে, চমকে যখন-তখন তাঁর থেকে টাকা ও বিশেষ সুবিধা আদায় করতেন ওই নেতারা। বেশ কয়েক মাস আগেও এলাকায় প্রোমোটারি ব্যবসা করার জন্য তাঁদের ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ‘তোলা’ দিতে হয়েছিল। এ দিন খোকনবাবু বলেন, ‘‘ছোটুকে বাজার দরের চেয়ে কম দামে ফ্ল্যাটও দিয়েছিলাম। অশোক ব্যক্তিগত ভাবে টাকা নিয়েছে। তার পরেও ওরা অতিরিক্ত টাকা দাবি করতে শুরু করে। দেব না বলতে ভয় দেখাচ্ছিল।’’ অভিযোগ, এ দিন দুপুরে ছোটু-সহ অন্যরা নির্মীয়মাণ আবাসনের সামনে যান। সেখানে তখন মিস্ত্রিরা কাজ করছিলেন। ছোটুরা গিয়ে নিরাপত্তারক্ষী ও মহিলা মিস্ত্রিদের মারধর করে খোকনের অফিসে ঢুকে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করেন। ওই প্রোমোটার বলেন, ‘‘টাকা দেব না বলতেই বচসা শুরু হয়। ওরা হুমকি দিতে থাকে। তখনই পুলিশকে জানাই।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে ওই ওয়ার্ডের কর্মিসভায় স্থানীয় সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাউন্সিলর পল্টু বণিককে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল এই তিন নেতার বিরুদ্ধেই। তৃণমূলের হাওড়া জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায় তাঁদের শোকজও করেন। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও বিভিন্ন সময়ে দলের অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে ওই তিন জনকে। এ দিন পল্টুবাবু বলেন, ‘‘ওঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে বলে আমি সম্পর্ক রাখিনি। এখন পুলিশ যা ব্যবস্থা নেবে, সেটাই হবে।’’

এ বিষয়ে অরূপবাবু বলেন, ‘‘যারা তোলাবাজি করবে, দলে তাদের জায়গা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকেই রেয়াত করা হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডে পুকুর বোজানো হচ্ছে বলে শুনেছি। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অভিযুক্তদের সঙ্গীরা দাবি করেন, পুকুর বোজানোর অভিযোগ পেয়েই তাঁরা গিয়েছিলেন। যদিও কাউন্সিলর পল্টুবাবুর দাবি, ‘‘পুকুর বোজানো হলে কাউন্সিলর, মেয়র বা পুলিশকে অভিযোগ জানাতে পারত। ওরা কে, যে দেখতে গিয়েছিল? তবে আমার ওয়ার্ডে কোনও পুকুর বোজানো হচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

extortion Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE