সাজা শুনে আদালত থেকে বেরিয়ে আসছে জাহাঙ্গির মল্লিক (বাঁদিকে)। (ডানদিকে), বাঁশবেড়িয়ায় যুবক খুনে সাজাপ্রাপ্ত শম্ভূ মিশ্র ও সুনীল দাস। ছবি:তাপস ঘোষ।
বুধবার চুঁচুড়া আদালতে দুটি পৃথক খুনের ঘটনায় অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিলেন বিচারক।
শাশুড়িকে কুপিয়ে খুনের অপরাধে সাজা হল জাহাঙ্গির মল্লিকের। স্ত্রী সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে, এই অপরাধে এক যুবককে খুনের দায়ে সাজা পেল ওই বধূর স্বামী এবং জামাইবাবু।
পুলিশ সূত্রে খবর, দাদপুরের কোলড়পাড় গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গির মল্লিক নাম গোপন করে শুভ নিতকর পরিচয় দিয়ে প্রতিবেশী ভারতী মণ্ডলের মেয়ে চম্পাকে বিয়ে করে। কিছুদিন পর সে স্ত্রীকে শেওড়াফুলির গড়বাগানে যৌনপল্লিতে যৌন বৃত্তিতে বাধ্য করে এবং প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে শুরু করে। মেয়ের উপর এই নির্যাতনে ভারতীদেবী জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এরপরই ২০১৫ সালের ১৫ই মার্চ রাত ৮টা নাগাদ জাহাঙ্গির ভারতীদেবীর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায়। জাহাঙ্গিরের সাত বছরের মেয়ে রাজলক্ষী দিদিমাকে মারতে দেখে চিৎকার করলে তাকেও মারতে যায় সে। সেই সময় ভারতীদেবীর বড় মেয়ে চিৎকার শুনে এসে ওই ঘটনা দেখে জাহাঙ্গিরকে বাধা দেন। বাসিন্দারা ছুটে এলে জাহাঙ্গির পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান ভারতীদেবী। খুনের অভিযোগে পুলিশ জাহাঙ্গিরকে গ্রেফতার করে। মামলায় সাক্ষী দেন ১৯ জন। শেষ পর্যন্ত প্রধান সাক্ষী সাত বছরের মেয়ে রাজলক্ষ্মীর বয়ানের ভিত্তিতেই জাহাঙ্গিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ (স্পেশাল কোর্ট) পুলক তিওয়ারি।
বাঁশবেড়িয়ার অবনীপল্লির বাসিন্দা শম্ভু মিশ্রের সন্দেহ ছিল তার স্ত্রীর সঙ্গে পড়শি যুবক অপু দাসের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সন্দেহে ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টা নাগাদ শম্ভূ তার জামাইবাবু সুনীল দাসকে সঙ্গে নিয়ে অপুকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে কুপিয়ে খুন করে। নিহতের মায়ের চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের মা। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে মামলা শুরু করে। এতদিন জামিনে মুক্ত ছিল শম্ভু মিশ্র ও সুনীল দাস।
সরকার পক্ষের আইনজীবী চন্ডীচরণ গঙ্গ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চুঁচুড়া আদালতের সেকেন্ড ট্রাক কোর্টের বিচারক জাহাঙ্গির কবীর তাদের সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও তা অনাদায়ে আরও ৩ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy