রাজ্য সড়কের তকমা ঘুচেছে হাওড়ার সাতটি রাস্তার। কোনওটা হয়েছে পুরসভার। কোনওটা পঞ্চায়েতের। ফলে, ওই রাস্তাগুলির ৫০০ মিটারের মধ্যে মদের দোকান চালাতে আর কোনও আইনি বাধা থাকল না। বুধবারই খুলে গেল কিছু মদের দোকান।
বাগনান-গাদিয়াড়া ভায়া শ্যামপুর রোড, বলুহাটি-একসরা, সলপ-একসরা, সলপ-আমতা, আমতা-বাগনান, বকুলতলা-আলমপুর এবং বালিখাল-বালিব্রিজ— এই রাস্তাগুলিই রাজ্য সড়কের তকমা হারিয়েছে। এই সব রাস্তার ধারে ২৭টি মদের দোকান রয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশমতো গত ১ এপ্রিল থেকে ওই দোকানগুলি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। রাস্তাগুলিকে নতুন তকমা দেওয়ার পরে বুধবারই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকানগুলিকে খোলার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বলুহাটি-একসরা, সলপ-আমতার মতো কয়েকটি রাস্তার ধারে এ দিনই মদের দোকানগুলি খোলে।
তবে, হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় ওই সাতটির মধ্যে যে রাস্তাগুলি পড়ছে, তার মধ্যে বেশিরভাগ মদের দোকান এ দিন অবশ্য খোলেনি। বাগনান-গাদিয়াড়া রোডের ধারে নুন্টিয়ার একটি মদের দোকানের মালিকেরা জানান, তাঁরা এখনও প্রশাসনের লিখিত নির্দেশ পাননি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সকলের কাছে দোকান খোলার লিখিত অনুমতি পৌঁছে দেওয়া হবে। জেলায় আরও রাজ্য সড়ক আছে। তবে সেগুলির গায়ে এখনও নতুন তকমা পড়েনি। সেগুলিকেও যদি রাজ্য সড়কের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তা হলে সেখানেও যে সব মদের দোকান বন্ধ রয়েছে, তা খুলতে বাধা থাকবে না।
আরও পড়ুন: দিনে-দুপুরে রিষড়ায় খুনে আতঙ্কিত মানুষ, কাঠগড়ায় প্রশাসন
জাতীয় সড়ক এবং রাজ্য সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও মদের দোকান রাখা যাবে না বলে গত সপ্তাহেই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানায়, ওই দুই সড়কের ধারে যেখানে জনসংখ্যা ২০ হাজারের কম, সেখানে ২২০ মিটার দূরত্বের বাইরে মদের দোকান রাখা যাবে।
জেলা আবগারি দফতরের দু’টি বিভাগ আছে। শিল্পাঞ্চল এবং গ্রামীণ। দু’টি বিভাগ মিলিয়ে জেলায় জাতীয় সড়ক (মুম্বই রোড) এবং রাজ্য সড়কের ধারে যে ১৩১টি মদের দোকান ছিল, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে সবগুলিই ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ায় প্রশাসন আইনের ফাঁকফোকর খুঁজতে বসে। প্রথম ধাপে নিজেদের হাতে থাকে রাজ্য সড়কগুলির তকমা ঘোচানো শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে মুম্বই রোডের ধারে যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত আছে, সেখানকার জনসংখ্যা নিয়ে সমীক্ষা শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মুম্বই রোডের ধারে যে সব মদের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ২০ হাজার জনসংখ্যার সীমা মেনে তার অনেকগুলিই ফের খোলা সম্ভব। তবে, এই প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ বলে মেনে নিয়েছেন প্রশাসনের ওই কর্তা।