Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ফণী বিদায়ে শেষ প্রচারে স্বস্তি

হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারে ছিল চমক। দুপুরে আকাশ পরিষ্কার হতেই ভদ্রেশ্বরের গেটবাজার থেকে মগরা হয়ে পান্ডুয়ার তিন্না মোড় পর্যন্ত মোটরবাইক মিছিল করেন তিনি।

মগরার জিটি রোডে স্কুটি চালিয়ে প্রচার হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র

মগরার জিটি রোডে স্কুটি চালিয়ে প্রচার হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ০৪:২৪
Share: Save:

রাত পোহালেই ভোট। তার আগে শনিবার প্রচারের শেষ ওভারে ফণী কোনও তাণ্ডব না-চালিয়েই বিদায় নিয়েছে। তাই জনসংযোগে ঝড় তুললেন দুই জেলার প্রার্থীরা।

হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারে ছিল চমক। দুপুরে আকাশ পরিষ্কার হতেই ভদ্রেশ্বরের গেটবাজার থেকে মগরা হয়ে পান্ডুয়ার তিন্না মোড় পর্যন্ত মোটরবাইক মিছিল করেন তিনি। তাঁর স্কুটির সামনে ছিল নরেন্দ্র মোদীর মুখোশ। লকেটের মাথা অবশ্য হেলমেটহীন ছিল। তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ পোলবার বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালান। বিকেলে হুডখোলা জিপে প্রচারে তাঁর সঙ্গী ছিলেন দলের হুগলি জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কংগ্রেসের প্রতুলচন্দ্র সাহা সকালে হেঁটে প্রচার করেন জিরাটে। বিকেলে সোমরা বাজারে ছিল পথসভা। সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা বাড়ি বাড়ি ঘুরে জনসংযোগের পাশাপাশি নকল ইভিএমে দলীয় কর্মীদের ভোট দেওয়ার প্রশিক্ষণ দেন। তিনি জানান, খারাপ আবহাওয়ার জন্য পথসভা বা বড় মিছিলের ঝুঁকি নেননি।

আরামবাগে দলীয় প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারকে নিয়ে দুপুরে চন্দ্রকোনায় রোড-শো করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ লগ্নে অপরূপা হেঁটে প্রচার চালান পুরশুড়ায়। তিনি বলেন, ‘‘ভাগ্যিস, শেষ দিনে ফণী কোনও তাণ্ডব চালায়নি। তাই শেষ প্রচারটা ভাল ভাবে করতে পারলাম।’’ কংগ্রেস প্রার্থী জ্যোতিকুমারী দাসও চন্দ্রকোনায় প্রচার চালান। সিপিএমের শক্তিমোহন মালিক সকাল থেকে হরিপাল বিধানসভা এলাকায় চক্কর কাটেন। বিকেলে ছিলেন আরামবাগে। বিজেপির তপন রায় হরিপালে প্রচারে যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে গোঘাট, আরামবাগ, পুরশুড়া, তারকেশ্বরেও মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

শ্রীরামপুরে সিপিএম প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায়ও ছিলেন ক্লান্তিহীন। সকালে হিন্দমোটর, দুপুরে রিষড়া এবং বিকেলে কোন্নগরে হেঁটে মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন তিনি। প্রচার যখন শেষ হল, ঘড়ির কাঁটা পাঁচটা ছুঁইছুঁই। তাঁর সঙ্গীদের দাবি, এ দিনও প্রায় ১৫ কিলোমিটার হেঁটেছেন‌ তীর্থঙ্কর। বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকার সকালে বৈদ্যবাটী, বড়ার বিভিন্ন জায়গায় হেঁটে জনসংযোগ করেন। তাঁর সমর্থনে শনিবার বিকেলে জাঙ্গিপাড়ায় জনসভা করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়। তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ দিন অবশ্য প্রচারে বেরোননি। দিনভর তিনি কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেন। তাঁর ভোট-সেনাপতিদের বক্তব্য, ভোটের ‘রণনীতি’ তৈরিতেই ব্যস্ত ছিলেন কল্যাণ।

অন্যদিকে, হাওড়ার উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ বিকেলে বাগনানে রোড-শো করেন। শুধু মহিলারাই তাতে যোগ দেন। বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় উলুবেড়িয়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ‘মহামিছিল’ করেন। তবে সিপিএম প্রার্থী মাকসুদা খাতুন এবং কংগ্রেস প্রার্থী সোমা রানিশ্রী রায় প্রচার করেননি বললেই চ‌লে। তাঁরা মূলত ব্যস্ত থাকলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায়। মাকসুদার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ‘এরিয়া ডমিনেশন’ ঠিক ভাবে করছে না। প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হলেও তাদের পরিচালনা কাদের হাতে থাকবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে।

মাকসুদা বলেন, ‘‘কিছু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী যাতে কড়া ভূমিকা নেয়, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছি।’’ জেলার (গ্রামীণ) পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। অন্য দিকে সোমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘কমিশনের তরফে বাড়ি বাড়ি যে ভোটার-স্লিপ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে তাতে গলদ আছে। অনেক বাড়িতেই স্লিপ পৌঁছয়নি।’’ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে জেলা নির্বাচন দফতর তথা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন।

সোমবার উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনও হবে। তারও প্রচারও শেষ হল শনিবার। এখানে তৃণমূল প্রার্থী ইদ্রিশ আলি, সিপিএম প্রার্থী সাবিরুদ্দিন মোল্লা, বিজেপির প্রত্যুষ মণ্ডল এবং কংগ্রেসের আলম দেইয়ান সকাল থেকেই প্রচারে নামেন। বিকেল পাঁচটা বাজতেই প্রচারে দাঁড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Cyclone Fani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE