Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দ্রুত হোক পর্যটনকেন্দ্র, চাইছে মাহেশ

ক’দিন বাদেই রথযাত্রা। প্রচুর লোকসমাগম হবে। এক মাস ব্যাপী মেলা বসবে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণায় খুশি মাহেশের বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করছেন এ বার কাজে গতি আসবে।

ক’দিন বাদেই রথযাত্রা। প্রচুর লোকসমাগম হবে। এক মাস ব্যাপী মেলা বসবে। ছবি: সংগৃহীত।

ক’দিন বাদেই রথযাত্রা। প্রচুর লোকসমাগম হবে। এক মাস ব্যাপী মেলা বসবে। ছবি: সংগৃহীত।

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ১২:৫০
Share: Save:

দাবিটা দীর্ঘদিনের। গত কয়েক বছরে বিস্তর পরিকল্পনাও হয়েছে। কিন্তু এখনও কাজ শুরু হয়নি। তা নিয়ে অনেকেরই আক্ষেপ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে মাহেশ।

বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে প্রসঙ্গটা তুলে ফেলেছিলেন শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়। আর কোনও কথা তাঁকে বলতে হয়নি। ঘোষণার সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলে দেন, ‘‘মাহেশে পর্যটনকেন্দ্র গড়তে হবে। এটা আমার প্রকল্প। উই হ্যাভ টু ডু ইট।’’

ক’দিন বাদেই রথযাত্রা। প্রচুর লোকসমাগম হবে। এক মাস ব্যাপী মেলা বসবে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণায় খুশি মাহেশের বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করছেন এ বার কাজে গতি আসবে। শ্রীরামপুরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরণ লাহা বলেন, ‘‘মাহেশবাসী হিসেবে চাই, ঐতিহাসিক এই জায়গা পর্যটন মানচিত্রে উঠে আসুক। এতে এলাকার অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটবে।’’ আবৃত্তিকার অরূপ মান্না বলেন, ‘‘মাহেশ উপেক্ষিত ছিল। এ বার মনে হচ্ছে কাজ হবে। আমরা বিভিন্ন ধামে বেড়াতে যাই, সেখানে থাকি। এ বার একই ভাবে মাহেশেও অন্য জায়গার লোক আসবেন, থাকবেন।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রীরামপুর পুরসভার তরফে কিছু দিন আগেই বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) রাজ্য প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে প্রস্তাব দেওয়া হয়, জগন্নাথ মন্দির এবং মাসির বাড়ির মন্দির— দু’জায়গাতেই প্রবেশদ্বার সংস্কার করতে হবে। জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন স্নানপিঁড়ি মাঠ এবং মাসির বাড়ি মন্দির সংলগ্ন মাঠ সাজানো হবে। অতিথিশালা করা হবে। মন্দির চত্বর এবং রাস্তাঘাট আলোয় সাজানো হবে। পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা হবে। শৌচাগার তৈরি করা হবে। রাস্তার দু’ধারে গাছ লাগানো এবং জগন্নাথ ঘাটের সৌন্দর্যায়ন‌ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা করার প্রস্তাবও রয়েছে।

পুরপ্রধান অমিয়বাবু জানান, প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের কাছেও প্রকল্পের কাগজপত্র পাঠানো হচ্ছে। বছর বারো আগে বাম আমলে শ্রীরামপুরের তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক রত্না দে নাগ রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন মাহেশকে হেরিটেজ ঘোষণার আবেদন জানিয়ে। বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ার দাবি জানান রাজ্য সরকারের কাছে। শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালে রাজ্য সরকার ওই প্রকল্প অনুমোদন করে। তবে, প্রকল্প তৈরি হলেও এখনও কাজ শুরু হয়নি।

এ বার মুখ্যমন্ত্রী আগ্রহ দেখানোয় মাহেশবাসী আশ্বস্ত। জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে সাধুবাদ। বহু দিন ধরে এই দাবি আমরা জানিয়ে এসেছি।’’ আর শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর তথা সেবাইত অসীম পণ্ডিতের বক্তব্য, ‘‘প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে জগন্নাথ মন্দির থেকে মাসির বাড়ি পর্যন্ত চেহারা বদলে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE