পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র
বাড়ির কাছেই এক যুবককে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পান্ডুয়ার রামেশ্বরপুর-গোপালনগর পঞ্চায়েতের দাঁপুর গ্রামে। নিহতের নাম রিয়াজুল রহমান (৩৩)। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দুষ্কৃতীদের ধরার দাবিতে দেহ আটকে মাঝরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তদন্তে নেমে বুধবার ভোরে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না তারও তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, ধৃতদের এক জনের স্ত্রী-র সঙ্গে রিয়াজুলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের জেরেই ওই যুবককে খুন করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিয়াজুল মিশরে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়ে পান্ডুয়ার বাড়িতে থাকতেন। বছর দেড়েক আগে তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য রিয়াজুল পান্ডুয়ায় ফিরে আসেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জ্যাঠতুতো ভাইয়ের সঙ্গে রিয়াজুল রামেশ্বরপুরে আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ সেখান থেকে একাই মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, বাড়িতে ঢোকার কিছুটা আগেই দুষ্কৃতীরা তাঁর উপর আক্রমণ করে। পর পর তিনটি গুলি করে। মাথায়, বুকে, কোমরে গুলি লাগে। গুলির শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তার আগেই অবশ্য দুষ্কৃতীরা গা-ঢাকা দেয়।
ওই ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। দেহ ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে পান্ডুয়া থানার ওসি সুমন রায়চৌধুরী এলাকায় আসেন। দেহ উদ্ধারে গেলে পুলিশকে বাধার মুখে পড়তে হয়। শেষ পর্যন্ত ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) উৎপল সাহা এবং সার্কেল ইনস্পেক্টর ইন্দ্রজিৎ পাল ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁদের আশ্বাসে রাত পৌনে ১টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন। রাতেই নিহতের জামাইবাবু মুজিবর রহমান মণ্ডল পান্ডুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ভোরেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম শেখ জমিরুদ্দিন এবং শেখ মহরম আলি। দু’জনেই স্থানীয় বাসিন্দা। জমিরুদ্দিনের মুম্বইতে গয়নার ব্যবসা রয়েছে। মহরম আলু ব্যবসায়ী। নিহতের মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটে মহরমের নাম পায় পুলিশ। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জেরা করে জমিরুদ্দিনকে ধরা হয়।
বুধবার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ধৃতদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ৮ দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা অপরাধের কথা কবুল করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মহরমকে সঙ্গে নিয়ে জমিরুদ্দিনই খুনের পরিকল্পনা করেন। ওই যুবককে মারার জন্য দুষ্কতীদের ভাড়া করেন তাঁরা। অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন মুজিবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy