রাজমিস্ত্রির সামান্য আয়ের টানাটানির সংসার। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোর পরেও বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল মেয়ে একটু গান শিখুক। কিন্তু মেয়ের মন তখন সুর নয়, নেচে উঠেছে নাচের ছন্দে। সেই নাচই যে মেয়েকে একের পর এক খ্যাতির মুকুট পরাবে ভাবতে পারেননি বাবা-মা।
হুগলির মগরায় এক কামরার ঘরে বসে মেয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া নাচের শংসাপত্র, সেরার পুরস্কার-পদক দেখানোর সময় জলে ভিজে উঠেছিল বাবা-মায়ের চোখ। চন্দননগর গভর্নমেন্ট কলেজের ছাত্রী মোহিনী সাহার নাচের মুকুটে খ্যাতির পালক কম নয়। ২০০৭ সালে ৮ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী অঞ্জু ভট্টাচার্যের কাছে কত্থকের তালিম নেওয়া শুরু। তালিম চলতে চলতেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। ক্রমে পা রাখা শুরু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায়। প্রতি ক্ষেত্রেই নিজের দক্ষতা প্রমাণে সফল মোহিনী। ২০১৪ সালে কটকে আন্তর্জাতিক নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান। এরপর কলকাতায় সারা বাংলা নৃত্য প্রতিযোগিতায় ১৪টি রাজ্যের মধ্যে সেরা নৃত্যশিল্পী। ২০১৫ সালে প্রয়াগে ইলাহাবাদ প্রয়াগ সঙ্গীত সমিতির নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম। ২০১৬ সালে মহারাষ্ট্রে জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় ১৪টি রাজ্যের মধ্যে প্রথম। দুর্গাপুরে জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম। ওড়িশার কটকে মহানদী উৎসবে নৃত্যে সেরার পুরস্কার। ওই বছরেই দেরাদুনে আন্তর্জাতিক নৃত্য প্রতিযোগিতায় ১৬টি দেশের নৃত্যশিল্পীদের মধ্যে সেরা। এ ছাড়াও একাধিক পুরস্কার, পদক রয়েছে মোহিনীর।
বাবা-মায়ের তো ইচ্ছা ছিল গানের। গান ফেলে নাচকে আপন করা কেন!