যত্ন: ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে কুকুরদের। নিজস্ব চিত্র
অবলা প্রাণীগুলোর প্রাণ সংশয় হতে পারে! কানাঘুসো শুনে স্থির থাকতে পারছিলেন না ওঁরা। শেষ পর্যন্ত রীতিমতো লোক জুটিয়ে প্রাণিহত্যার বিরুদ্ধে প্রচার সেরে ফেললেন ওঁরা। যে কুকুরদের নিয়ে ‘সমস্যা’, তাদের নির্বীজকরণের ব্যবস্থাও হল। বৈদ্যবাটী কাজিপাড়ার রাজন্যা চট্টোপাধ্যায় এবং রুমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন উদ্যমকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই।
রাজন্যা সদ্য স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। রুমা সঙ্গীতশিল্পী। তাঁরা জানান, সম্প্রতি এলাকার একটি শিশুকে একটি রাস্তার কুকুর আঁচড়ে দেয়। ওই ঘটনায় কিছু লোকের রাগ গিয়ে পড়ে তিনটি কুকুরের উপর। তাদের মেরে ফেলা হতে পারে বলেও রাজন্যারা শুনতে পান। সংশ্লিষ্ট লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও বিশেষ লাভ হয়নি। শেষে তাঁরা ঠিক করেন, কুকুরদের বাঁচাতে কিছু একটা করতে হবে। সেইমতো কলকাতায় কুকুরদের নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে আশপাশের কুকুরদের নির্বীজকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে এবং স্থানীয় কাউন্সিলর মানোয়ার হোসেনকেও বিষয়টি জানানো হয়।
রবিবার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যেরা বৈদ্যবাটীতে আসেন। রাজন্যা বলেন, ‘‘নির্বীজকরণের আগে কুকুরকে ওষুধ খাওয়াতে হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রাজকুমার, রাহুল, সুকান্তদের সঙ্গে সবাই মিলে সাতটি কুকুরকে ধরে ওই ওষুধ খাইয়েছি। সাত দিন পরে নির্বীজকরণের ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে।’’ এ দিন এলাকায় মাইক নিয়েও রীতিমতো প্রচার চলে। প্রাণিহত্যা যে আইনত অপরাধ, তা বোঝানো হয়। অবলা কুকুরকে যাতে মারধর না করা হয়, সে ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কাউন্সিলর মানোয়ার হোসেন বক্তব্য রাখেন। পুলিশকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচিতে অভিষিক্তা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী মুখোপাধ্যায়দের মতো স্থানীয় অনেকেই সামিল হয়েছিলেন।
রুমা বলেন, ‘‘অনেকেই হয়তো চান না, অবলা প্রাণীগুলোর উপর অত্যাচার হোক। কিন্তু তাঁরা সাতেপাঁচে থাকেন না। অন্যায় দেখেও কিছু বলেন না। ভাল লাগছে, এমন অনেকেই আজ বেরিয়ে এসেছিলেন।’’ আর রাজন্যার কথায়, ‘‘কুকুরগুলোর জন্য তো বলার কেউ নেই। এই কাজ করে শান্তি পেলাম। ওদের উপর যাতে অত্যাচার না হয়, ভবিষ্যতেও সে দিকে লক্ষ্য রাখার চেষ্টা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy