Advertisement
E-Paper

দামের ধাক্কায় বিপাকে মধ্যবিত্ত

পটল বিকিয়েছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। টোম্যাটো ৬০-৭০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। ঢেঁড়শ ছিল ৫০ টাকা কেজি। দেড়শো টাকার কমে কাঁচালঙ্কা মেলেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০৬:০৮
অপেক্ষা: উলুবেড়িয়া নিমদিঘি বাজারে আনাজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরিদ্দারের আনাগোনা কম। ছবি: সুব্রত জানা

অপেক্ষা: উলুবেড়িয়া নিমদিঘি বাজারে আনাজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরিদ্দারের আনাগোনা কম। ছবি: সুব্রত জানা

বাজারে গেলেই ছ্যাঁকা লাগছে হাতে!

লকডাউনের সময় সেই যে আনাজের দাম বাড়তে শুরু করেছে, অক্টোবরেও তা নামার লক্ষণ নেই। এই আগুন দামেই পুড়ছে গেরস্থের হাত। চাষি থেকে ব্যবসায়ী— পরিস্থিতির জন্য সকলেই আমপানের দোহাই দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় আনাজের জোগানে টান পড়ে। তাতেই এমন পরিস্থিতি। হাওড়া এবং হুগলি— দুই পড়শি জেলাতেই একই পরিস্থিতি।

হাওড়ার বাগনানের বিভিন্ন বাজারে মঙ্গলবার পটল বিকিয়েছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। টোম্যাটো ৬০-৭০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। ঢেঁড়শ ছিল ৫০ টাকা কেজি। দেড়শো টাকার কমে কাঁচালঙ্কা মেলেনি। কোথাও দামে ডবল সেঞ্চুরি করেও গৃহস্থের চোখে জল এনেছে কাঁচালঙ্কা। জেলার নানা জায়গাতেই এই ছবি দেখা গিয়েছে।

কেন কমছে না দাম?

ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, লকডাউনে গাড়ির সমস্যায় দাম বেড়েছিল। পরে গাড়িভাড়া স্বাভাবিক হলেও গত ২০মে আমপানে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি বিগড়ে যায়। উদয় পাছাল নামে বাগনান মুরালিবাড়ি বাজারের এক আনাজ বিক্রেতা বলেন, ‘‘পাইকারি বাজার থেকে যেমন দরে কিনছি, তেমনই বেচছি। দাম যে আরও বাড়েনি, সেটাই রক্ষে।’’ হাওড়া জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমেশচন্দ্র পালের বক্তব্য, ‘‘অন্য জেলার থেকে হাওড়ায় আনাজের দাম তুলনামূলকভাবে কমই আছে। সামনেই শীতকালীন আনাজের মরসুম। বাজারে নতুন আনাজ এলে দাম কমবে। তবে এরমধ্যে দাম যদি অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, প্রশাসন চুপ থাকবে না।’’ হাওড়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আনাজের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভিযোগ এলে বাজারে হানা দেওয়া হবে।

এই এ দিন জ্যোতি আলু বিকিয়েছে ৩০-৩২ টাকা কেজিতে। কয়েকদিন আগেও তা ছিল ৩৫ টাকা। পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা থেকে নেমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে।

পেঁয়াজের ক্ষেত্রে উল্টো ছবি হুগলিতে। পান্ডুয়া স্টেশন বাজারে কয়েক দিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজিতে। মঙ্গলবার তা হাফ সেঞ্চুরি করেছে। এই ব্লকের বিভিন্ন বাজারে অন্যান্য আনাজেরও আগুনদাম। কয়েক দিন আগে ঢেঁড়শ ছিল ৩৫ টাকা কেজি। আজ তা ৬০ টাকা। ১১০ টাকার কাঁচালঙ্কার দর দেড়শো টাকা হেঁকেছেন দোকানি। টোম্যাটোর দাম দ্বিগুণ বেড়ে ৬০ টাকা কেজিতে পৌঁছে গিয়েছে। আরামবাগ, শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটী, চুঁচুড়ার বিভিন্ন বাজারে পটল, ঢেঁড়শ, বেগুন, করলা, লাউ— সব কিছুরই দাম বেড়েছে।

চন্দননগর বউবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সুজয় দাস বলেন, ‘‘আনাজের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে আগামীদিনে কী হবে কে জানে! যারা চার-পাঁচ বস্তা আলু-পেঁয়াজ নিতেন, এখন খুব জোর এক বস্তা নিচ্ছেন।’’ চুঁচুড়ার খুচরো আনাজ বিক্রেতা রমেন দাস বলেন, ‘‘প্রচুর দাম দিয়ে আনাজ কিনতে হচ্ছে। সে ভাবেই বেচতে হচ্ছে। এ নিয়ে খদ্দেরের সঙ্গে ঝগড়ঝাটিও হচ্ছে। যাচ্ছেতাই অবস্থা। এ ভাবে কত দিন চলবে?’’

হুগলি জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব শেখ ফিরদোসুর রহমানও দাম কমার জন্য

শীতকালীন আনাজের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যেই নতুন আনাজ উঠতে শুরু করবে। তখন দামও স্বাভাবিক হতে থাকবে।’’ তাঁর দাবি, নাসিক থেকে পেঁয়াজের আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলু ভিন রাজ্যে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। দিন দশেকের মধ্যে আলুর দাম কিছুটা কমবে বলে তাঁরা মনে করছেন।

Middle class High price Food crops
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy