সরকারি ধান কেনার শিবির থেকে যথাযথ সহায়ক মূল্যে মিলছে না। আরামবাগের বিভিন্ন গ্রামে এমনই অভিযোগ তুলেছেন চাষিরা।
চাষিদের অভিযোগ, ‘‘ধানের গুণমান খারাপ, এই অজুহাতে কুইন্টাল প্রতি ন্যূনতম ৫ কিলোগ্রাম থেকে ১০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বেশি ধান দিতে হচ্ছে। গোঘাট ১ ব্লকের সন্তা গ্রামের চাষি সমীর রায়ের অভিযোগ, “স্থানীয় ভিকদাসে অত্যাবশকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম (ইসিএসসি)-এর একটি শিবিরে ৩০ কুইন্টাল ধান দিয়েছি। প্রতি কুইন্টালে ৬ কিলোগ্রাম করে বেশি ধান দিতে হয়েছে। ধানে নাকি ধুলো আছে, অপুষ্ট ইত্যাদি অজুহাত ছিল ওই শিবিরের সঙ্গে যুক্ত চালকল কর্তৃপক্ষের।” একই রকম কুইন্টাল প্রতি ৫ কিলোগ্রাম থেকে ১০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বেশি ধান নেওয়ার অভিযোগ করেছেন আরামবাগের গৌরহাটির কৃষক শঙ্কর মাইতি। পুড়শুড়ার ডিহিবাতপুরের কার্তিক পাল, খানাকুলের চব্বিশপুরের শেখ হসমতের অভিযোগও এক।
আরামবাগ চালকল মালিক সংগঠনের সভাপতি সত্যনারায়ণ মাজি বলেন, “সরকারি স্তরে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধানের গুণমাণ অনুযায়ী কুইন্টালে আমরা ন্যূনতম ৫ কেজি করে বেশি ধান নিচ্ছি। ১ কুইন্টাল ধান থেকে ৬৮ কিলো চাল পাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা ৬৩ কিলোর বেশি হচ্ছে না। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে চাষি পিছু একবারে ৩০ কুইন্টাল ধান বিক্রির কোটা থাকলেও আমরা চাইছি ৩১ কুইন্টল ৫০ কেজি।” মিল মালিকদের অভিযোগ, প্রকৃত চাষি যাঁরা ধান নিয়ে আসছেন তাঁদের ধান অনেক ক্ষেত্রেই ভাল থাকছে। কিন্তু অধিকাংশই অসাধু ব্যবসাদাররা চাষি সেজে খারাপ ধান বিক্রি করে সরকারি প্রকল্পটি নষ্টের চেষ্টা করছে।
হুগলি জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এনসিসিএফ, বেনফেড, কনফেড, অত্যাবশকীয় পণ্য-সরবরাহ নিগম (ইসিএসসি) ইত্যাদি সংস্থার মাধ্যমে জেলায় সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়েছে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে। ওই সব সংস্থার হয়ে স্থানীয় এলাকায় চাষিদের কাছ থেকে ধান নিচ্ছে এলাকার কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিগুলি। সমিতিগুলির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন চালকলগুলিকে। এছাড়া কিসান মাণ্ডিতেও শিবির করে ধান নেওয়া হচ্ছে। সহায়ক মূল্যে খালি, আম্রপালি ইত্যাদি মোটা প্রজাতির ধান কেনা হচ্ছে। কুইন্টাল প্রতি সরকারি সহায়ক মূল্য ধার্য হয়েছে ১৪১০ টাকা। কিসান মাণ্ডিতে ধান বিক্রিতে উৎসাহিত করতে চাষিরা কুইন্টাল প্রতি আরও ১৫ টাকা বেশি পাবেন।
কুইন্টাল প্রতি চাষিদের অতিরিক্ত ধান দেওয়া প্রসঙ্গে হুগলি জেলা খাদ্য নিয়ামক সুরজিৎ দেবনাথ বলেন, “আমাদের গাইড লাইনে বলা আছে গুণমান সম্পন্ন ধান হলে কুইন্টল প্রতি ১৪১০ টাকা দিতে হবে, তাতে ধুলো থাকবে না। আগরা বা বগরা ধানও (অপুষ্ট) থাকবে না।” তিনি জানান সমগ্র জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনা হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy