Advertisement
২৫ মে ২০২৪

ডানকুনির লুটে অস্ত্র সিবিআইয়ের কার্ড!

কিছুদিন আগে কলকাতার বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা লুট হয়েছিল ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছে। সেই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক সপ্তাহ আগে, গত ১৯ এপ্রিল রাতে বালির মাইতিপাড়া থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

জািলয়াতি: আটক করা হয়েছে এই গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

জািলয়াতি: আটক করা হয়েছে এই গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

গৌতম বন্দ্যেপাধ্যায়
ডানকুনি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০২:২৮
Share: Save:

লুটপাটে জড়িতদের কাছে ‘সিবিআইয়ের কার্ড’!

‘মিনিস্ট্রি অব হোম’ বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বোর্ড লাগানো গাড়ি!

কিছুদিন আগে কলকাতার বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা লুট হয়েছিল ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছে। সেই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক সপ্তাহ আগে, গত ১৯ এপ্রিল রাতে বালির মাইতিপাড়া থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তদন্তে ধৃতদের একজনের থেকে এক সিবিআই অফিসারের নাম লেখা কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাইতিপাড়া থেকেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে লুটপাটের দিন দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করা ওই গাড়ি।

তদন্তকারীদের দাবি, দুষ্কৃতীরা সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে বিহার-কলকাতা রুটের একটি সরকারি বাসে হানা দিয়ে ওই লুটপাট চালিয়েছিল। ওই বাসে করে ব্যবসায়ীর কিছু কর্মী ওই টাকা আনছিলেন। দুষ্কৃতীদের কাছে খবর ছিল, ভোটের জন্য ‘কালো টাকা’ আসছে। তাই ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছে ওই ব্যবসায়ীর কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে নামিয়ে নিয়ে তারা টাকা হাতায়। তারা ভেবেছিল, ওই টাকা লুট করলে কেউ পুলিশের কাছে যাবে না। কিন্তু সেই ভাবনাই কাল হল।

ব্যবসায়ীর দায়ের করা অভিযোগের তদন্তে নেমে পুলিশ প্রতাপ সরকার, কেরামত আলি এবং ভরত পাল নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। তারা বর্তমানে ডানকুনি থানার পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তারা অপরাধ কবুল করেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। কিন্তু দুষ্কৃতীদের কাছে সিবিআইয়ের কার্ড বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বোর্ড লাগানো গাড়ি এল কোথা থেকে?

পুলিশ জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর পিছনে কোনও বড় চক্র রয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, ধৃত প্রতাপের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। তার এক নিকটাত্মীয় সিবিআইয়ে কর্মরত। ধৃত ভরত বড়বাজারের ওই ব্যবসায়ীর কর্মচারী। বিহার থেকে টাকা আসার বিষয়টি সে-ই দলের লোকের কানে পৌঁছে দেয়। সে-ই ঘটনার মূল আড়কাঠি। কোনও ভাবে প্রতাপ তার নিকটাত্মীয়ের কার্ড হাতিয়ে ওই দুষ্কর্ম করে। তবে, ওই কার্ড আসল কিনা, তা দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা গাড়িটি কোথা থেকে পেল তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।

গ্রেফতারের সময়ে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১৫ লক্ষ টাকা, দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছিল। কিন্তু লুটের বাকি টাকার এখনও হদিস পায়নি। তদন্তকারীদের অনুমান, বাকি টাকা দুষ্কৃতীরা কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করেছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সদর) বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, ওই চক্রে জড়িত অন্য দুষ্কৃতীদের খোঁজে পুলিশ ইতিমধ্যেই কলকাতা, বারাসত-সহ বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারেরও চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Police CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE