চোখমুখে লঙ্কাগুঁড়ো ঘষে দিয়ে, ইট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে এক অলঙ্কার ব্যবসায়ীর হাত থেকে সোনার গয়না-সহ ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে পান্ডুয়ার কুলটি রোডের এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও দুষ্কৃতীদের ধরতে পারেনি। লুঠ হওয়া গয়নাও উদ্ধার হয়নি। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন অবশ্য শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটি রোডের বাসিন্দা অমিত কর্মকার নামে ওই ব্যবসায়ীর গয়নার দোকানটি তেলিপাড়ায় জিটি রোডের কাছেই শান্তশীলা মার্কেটে। শনিবার রাত ৯টা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করেন। একটি ব্যাগে দোকানের চাবি, কয়েকটি সোনার গয়না এবং কাগজপত্র নিয়ে মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির সামনে মোটরবাইক থামাতেই কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর উপর চড়াও হয়।
অমিতবাবু বলেন, ‘‘আচমকাই পাঁচ দুষ্কৃতী আমার চোখমুখে লঙ্কাগুঁড়ো ঘষে দেয়। আমার ব্যাগটি চায়। আমি রাজি না হওয়ায় ইট দিয়ে মাথায় মারে। আমি পড়ে যাই। ওরা আমার হাত থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ওরা বাংলায় কথা বলছিল। অন্ধকারে ওদের মুখ দেখতে পাইনি।’’ তবে, ব্যবসায়ীর আঙুলের সোনার আংটি বা মোবাইল ফোন নেয়নি দুষ্কৃতীরা।
অমিতবাবুর চিৎকারে বাড়ির লোকজন এবং প্রতিবেশীরা চলে তার আগেই অবশ্য দুষ্কৃতীরা দু’টি মোটরবাইকে চেপে গা-ঢাকা দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় অমিতবাবুকে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের অনুমান, দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীর গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল। আগে থেকেই অমিতবাবুর বাড়ির সামনে ওৎ পেতে ছিল তারা।
রবিবার সকালে আক্রান্তের বাড়ির সামনে লঙ্কাগুঁড়ো পড়ে থাকতে দেখা যায়। অমিতবাবুর স্ত্রী শিল্পীদেবী বলেন, ‘‘যা ঘটল, রীতিমতো ভয়ের ব্যাপার। স্বামীকে ওরা হয়তো মেরেই ফেলত। দু’টো বাচ্চা নিয়ে থাকি। আমরা আতঙ্কিত।’’ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘‘এই রাস্তায় অনেক রাত পর্যন্ত লোক চলাচল করে। অটো, টোটো, মোটরবাইকও চলে। যে সময় ঘটনা ঘটেছে, তখন এমন কিছু রাত নয়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ওই সময়েই যদি দুষ্কৃতীরা এমন বেপরোয়া হয়ে ওঠে, তা হলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’’
অপরাধীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত সাজার দাবি তুলেছেন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির পান্ডুয়া ব্লক সভাপতি গোপালচন্দ্র দে।