শ্রীরামপুরের সঙ্গে আরামবাগ।
পুরকর্মীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ায় বুধবার থেকে শ্রীরামপুরের সঙ্গে আরামবাগ পুরসভাও বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। একই কারণে বন্ধ হয়ে গেল জাঙ্গিপাড়ার মুণ্ডলিকা পঞ্চায়েতও। তবে, এখানে এক জন নন, সদস্য-কর্মী মিলিয়ে ১২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এ দিন সকালেই মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত শ্রীরামপুরের এক বিদায়ী কাউন্সিলরের।
হুগলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আরামবাগ পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মীর করোনা পজ়িটিভ হয়েছে বলে মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পুরসভা বন্ধ করেছি। তবে, জল, আলো, স্বাস্থ্য, সাফাই ইত্যাদি জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসা ২০ জন পুরকর্মীর লালারসের নমুনা এ দিন আরামবাগ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। তাঁদের গৃহ-নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। পুরসভা চত্বর, আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রত্যেকের পাড়া স্যানিটাইজ় করা হয় পুরসভার তরফে।
মুণ্ডলিকা পঞ্চায়েতের আক্রান্তদের মধ্যে চার জন জনপ্রতিনিধি এবং আট জন কর্মী রয়েছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, আক্রান্ত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে এক জনের স্বামী এবং এক জনের যুবক ছেলেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পঞ্চায়েতে কাজে আসা কয়েক জন গ্রামবাসীও আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিকও আছেন।
বিডিও (জাঙ্গিপাড়া) সীতাংশুকুমার শীট বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের আক্রান্তেরা সকলেই উপসর্গহীন। তাঁদের বাড়িতে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। মঙ্গল ও বুধবার মিলিয়ে ৪০ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।’’
করোনা আক্রান্ত শ্রীরামপুর পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর পিনাকীপ্রসাদ ভট্টাচার্য (৬৯) ওরফে গুন্ডা বুধবার সকালে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, তাঁর শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। ডায়ালিসিসও চলছিল। তৃণমূলের এই বর্ষীয়ান কাউন্সিলর জেলা রাজনীতিতে সজ্জন মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
উত্তরপাড়া, কোন্নগরের পরিস্থিতিও জটিল হচ্ছে। গত কয়েক দিনে মৃত্যুও হয়েছে। তা সত্বেও সাধারণ মানুষের একাংশের মধ্যে হেলদোল বা সাবধানতা চোখে পড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিশেষত করোনা আক্রান্তের পরিবারের সুবিধার্থে একটি অ্যাপ চালু করেছে উত্তরপাড়া পুরসভা। পুর-প্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘এই অ্যাপে খবর দিলে পুরকর্মীরা ওষুধ-সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ওই সব বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসবেন। কারও আর্থিক সমস্যা থাকলে নিখরচায় এই পরিষেবা দেওয়া হবে।’’
একই সঙ্গে করোনা আক্রান্তের বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহে বিপদের ঝুঁকি এড়াতে সতর্ক থাকতে চাইছে উত্তরপাড়া পুরসভা। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, আক্রান্তদের বাড়িতে হলুদ বালতি দেওয়া হবে। তাতেই সংশ্লিষ্ট পরিবারকে আবর্জনা জমিয়ে রাখতে হবে। পুরসভার জঞ্জাল বিভাগের বিশেষ দল তা সংগ্রহ করে বিশেষ জায়গায় মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।