Advertisement
E-Paper

কাঁধে করে এনে দেহ চেম্বারে ফেলেছিল পিন্টু

বাকি তিন যুবক যখন ফিরে যাচ্ছেন, তখনই পিন্টু ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশ্বনাথবাবুর উপর। মাটিতে ফেলে বুকে ঘুষি মারতে থাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২২
ফের: কী ভাবে খুন, দেখাচ্ছে অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র

ফের: কী ভাবে খুন, দেখাচ্ছে অভিযুক্ত। নিজস্ব চিত্র

মাঠের মধ্যে ঘুষি মেরে প্রাক্তন প্রেমিকার বাবা বিশ্বনাথ দাসকে খুনের কথা সে আগেই কবুল করেছিল। এ বার কী ভাবে সে মৃতদেহ নিজের কাঁধে চাপিয়ে মাঠের একপ্রান্তের পরিত্যক্ত আবাসনের পিছনে সেপটিক ট্যাঙ্কের চেম্বারে ফেলে দেয়, বুধবার তা পুলিশে সামনে অভিনয় করে দেখাল কোন্নগরের ধর্মডাঙায় ওই প্রৌঢ় খুনের ঘটনায় ধৃত পিন্টু সিংহ।

ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য বুধবার দুপুরে উত্তরপাড়া থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ এবং কোন্নগর ফাঁড়ির ইনচার্জ অনুপ মণ্ডল পিন্টুকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। কোন্নগর এবং রিষড়া স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায় একটি কারখানা চত্বরের মাঠের পূর্ব দিকে গিয়ে পিন্টু দেখিয়ে দেয়, শুক্রবার রাতে মাঠের পাশে কুল এবং আম গাছের নীচে বসে তারা পাঁচ জন তাস খেলে। মদও খায়। বিশ্বনাথবাবুও সেই দলে ছিলেন।

বাকি তিন যুবক যখন ফিরে যাচ্ছেন, তখনই পিন্টু ঝাঁপিয়ে পড়ে বিশ্বনাথবাবুর উপর। মাটিতে ফেলে বুকে ঘুষি মারতে থাকে। প্রৌঢ়ের আর্তনাদ শুনে এক যুবক পিছন ফিরে দেখেন, তাঁকে ঘুষি মারছে পিন্টু। তখন তিন জন মিলে সেখানে গেলে পিন্টু তাঁদের বলে, তাঁরা যেন চুপচাপ ফিরে যান। বিশ্বনাথবাবু মারা গিয়েছেন। এ বার সে দেহ সরিয়ে ফেলবে। তা শুনে ওই যুবকেরা আর দাঁড়াননি।

সোমবার সকালে পিন্টুকে আটক করে পুলিশ। বেগতিক বুঝে ওই যুবকেরা ঘটনার কথা পুলিশকে জানান।

পিন্টুকে নিয়ে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। খুন ও প্রমাণ লোপের অভিযোগে পিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তাকে পুলিশ হাজতে পাঠিয়েছে। ভাবলেশহীন মুখে এ দিন পুলিশকে পিন্টু দেখিয়ে দেয়, কী ভাবে প্রায় দু’শো মিটার মাঠ পেরিয়ে বিশ্বনাথবাবুর দেহ চেম্বারের ফুট চারেক গভীর জলে সে ফেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,পিন্টুর স্ত্রী-ছেলে আছে। নিহতের মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি ওই যুবতীর বিয়ে ঠিক হলে তা মানতে পারেনি পিন্টু। বিশ্বনাথবাবুর উপর তার আক্রোশ তৈরি হয়। তার জেরেই সে ওই কাণ্ড ঘটায়। ঘুষিতে প্রৌঢ়ের পাঁজরের হাড় ভেঙে যায়। ফুসফুসেও ক্ষত হয়।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি পরিত্যক্ত আবাসন রয়েছে। আশপাশে ঝোপজঙ্গল। পরিত্যক্ত আবাসনে মানুষের আনাগোনার চিহ্ন স্পষ্ট। সেখানে ছড়িয়ে মদের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস, তাসের খালি প্যাকেট, চাদর, ঝাঁটাও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেললাইনের ধারের ওই জায়গায় আলো জ্বলে না। ঘুটঘুটে অন্ধকারে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা লেগে থাকে। মদ-গাঁজা, জুয়া সবই চলে। পুলিশের বক্তব্য, তারা টহল দিলেও কার্যত অরক্ষিত অত বড় এলাকায় সব সময় নজরদারি সম্ভব হয় না।

Septic tank Dead Body Police Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy