সাহায্য: নজিবুল করিম। নিজস্ব চিত্র
কোথায় বাঁধ ভেঙেছে, কে জলবন্দি হয়ে রয়েছেন—সব খবর আসছে তাঁর ‘কন্ট্রোল রুমে’। সেই খবর পেয়েই দুর্গত এলাকায় রওনা দিচ্ছেন তিনি ও তাঁর দলবল।
তিনি নজিবুল করিম। খানাকুল-২ ব্লকের রাজহাটি গ্রামের বাসিন্দা। দিন কয়েকের টানা বৃষ্টি ও ডিভিসি জল ছাড়ার পরে সময় নেই তাঁর। স্বেচ্ছায় উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তিনি জানেন, একার পক্ষে উদ্ধারকাজ সম্ভব নয়। তাই প্রায় ৬০ জন যুবককে জোগাড় করে উদ্ধারকারী দল তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, আশপাশের গ্রাম পিছু ১০ জন করে আলাদা দলও তৈরি হয়েছে তাঁর নেতৃত্বে। সেভাবে প্রশিক্ষিত না হলেও শুধু মানসিক জোরেই এ বারের প্লাবনে সফল ভাবে কাজ করছে সেই দলের সদস্যরা।
গত বুধবার রাতে রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছিল ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের ঘোড়াদহ গ্রামে। জলবন্দি হয় ৩৫টি পরিবার। সেই খবর পৌঁছয় নজিবুলের কাছে। তার পরেই উদ্ধারকাজে নামেন তিনি ও তাঁর দলবল। খানাকুল ২ এর বিডিও সুজিত রায় তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। শুধু ধান্যগোড়ি নয়, জলমগ্ন খানাকুলের নানা প্রান্তে দিন-রাত এক করে এখন ঘুরছেন তাঁরা।
নজিবুলের রাজনৈতিক পরিচয়, তিনি এলাকার যুব তৃণমূল নেতা এবং খানাকুল ২ ব্লকের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে তাঁর সেই পরিচয় পিছনে চলে যায়। রাজনৈতিক রং না দেখেই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধারকাজে। স্থানীয় মানুষের কাছে তখন তাঁর একটাই পরিচয়, ‘মুশকিল আসান’। স্থানীয় ভীমতলা বাজারে একটি ওষুধের দোকান চালান তিনি। সেটাই তাঁর ‘কন্ট্রোল রুম’। নজিবুল বলেন, ‘‘গত বছর দশেক ধরে এই কাজ করছি। শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সঙ্কটেও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছেতেই আমরা এক হয়েছি।’’
নজিবুলের উদ্ধারকারী দলে রয়েছেন স্থানীয় কুশালী গ্রামের যুবক দেবাশিস প্রামাণিক, রাজহাটি গ্রামের সওকত মুন্সী, খানতারা গ্রামের শঙ্কর মালিকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘নজিবুলদার সঙ্গে কাজ করলে কোনও কাজই ঝুঁকির মনে হয় না। দুর্গতদের আশীর্বাদই প্রেরণা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy