Advertisement
E-Paper

রবিবারেও বাস চলল না চুঁচুড়ায়

মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে বাস ধর্মঘট তুলে নিতে সম্মত হয়েছিলেন চুঁচুড়া মহকুমার বাসমালিকরা। কিন্তু বেঁকে বসেছেন বাসকর্মীরা। পরিণামে রবিবারও বাস বন্ধ থাকল হুগলির সদর মহকুমায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৯
রাস্তায় নামেনি কোনও বাস। চুঁচুড়া বাসস্ট্যান্ডের ছবি। ছবি:তাপস ঘোষ।

রাস্তায় নামেনি কোনও বাস। চুঁচুড়া বাসস্ট্যান্ডের ছবি। ছবি:তাপস ঘোষ।

মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে বাস ধর্মঘট তুলে নিতে সম্মত হয়েছিলেন চুঁচুড়া মহকুমার বাসমালিকরা। কিন্তু বেঁকে বসেছেন বাসকর্মীরা। পরিণামে রবিবারও বাস বন্ধ থাকল হুগলির সদর মহকুমায়। ছুটি দিনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষজন বাস না পেয়ে নাকাল হলেন। বাস বন্ধের প্রভাব পড়ে পাশের মহকুমা চন্দননগরেও। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার জে‌লার বাসমালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তবে এ দিন একমাত্র কালনা-পান্ডুয়া রুটে বাস চলেছে।

হুগলি জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সুজয় সাধু বলেন, ‘‘আগামীকাল (সোমবার) থেকেই বেআইনি গাড়ি এবং বাসরুটে টোটো চলাচল বন্ধ করতে জোরদার অভিযান চা‌লানো হবে।’’

জিটি রোড-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-সহ হুগলির সবক’টি বাসরুটে লাগামহীন টোটো ও বেআইনি অটো চলাচল বা ট্রেকারে যাত্রী পরিবহণ বন্ধের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন বাসমালিকরা। তাঁদের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে টোটো, অটো, ট্রেকারের দাপটে জেলার বিভিন্ন রুটে বাসের সংখ্যা প্রচুর কমে গিয়েছে। আয়ও কমে গিয়েছে। বাস চালিয়ে লাভ হচ্ছে না। গত শুক্রবার থেকে চুঁচুড়া মহকুমার সবক’টি রুটে বাস ধর্মঘট শুরু হয়। শনিবার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বাসমালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। আশ্বাস মেলে পরিবহণমন্ত্রীরও। তার পরেই ধর্মঘট তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। বাসের চালক এবং কন্ডাক্টরদের একাংশ অবশ্য ওই সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকার করেন। তাঁদের বক্তব্য, টিকিট বিক্রির হিসাব অনুযায়ী তাঁরা কমিশন পান। ফলে বাসে যাত্রী কমে যাওয়ায় তাঁদেরও আয় কমেছে।

বাসকর্মীদের আরও বক্তব্য, আন্দোলন হলেই বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে প্রশাসন। তারপর দু’-এক দিন নামমাত্র ধরপাকড়ও চলে। ফের লাগাম আলগা করে দেওয়া হয়। ফলে বেআইনি গাড়ি দাপিয়ে বেড়ায়। তাঁদের দাবি, বেআইনি গাড়ি পুরোপুরি বন্ধ করার পরে বাস চালাতে হবে। নয়তো প্রতি মাসে তাঁদের নির্দিষ্ট বেতন দিতে হবে। চার নম্বর বাসরুটের এক কন্ডাক্টর বলেন, ‘‘সারাদিন খাটনি শেষে শ’দেড়েক টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরি। এতে কী সংসার চলে?’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যখন বাস বন্ধ করেছিলাম, তখনও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বেআইনি গাড়ি বন্ধ করে দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু কিচ্ছু হয়নি। এ বারও তাই বলছেন। তাঁরা যে ব্যবস্থা নেবেন তার নিশ্চয়তা কোথায়? আগে কাজে করে দেখাক।’’ ২ নম্বর রুটের এক বাসকর্মীর বক্তব্য, ‘‘বয়স হয়ে গিয়েছে। এখন আর অন্য কোথাও কাজ পাব না। তাই মুখ বজে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে আমাদের।’’

বাসমালিকদের অবশ্য বক্তব্য, বাস চালিয়ে যা আয় হয় তাতে বাসকর্মীদের নির্দিষ্ট পরিমাণ মাইনে বেঁধে দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। ২ নম্বর রুটের এক বাসমালিক রাখাল দাস বলেন, ‘‘নিজেরাই লোকসানে চলছি। বাসকর্মীদের উপার্জ‌নও অনেক কমেছে। এই অবস্থায় প্রশাসনের দিকেই তাকিয়ে আমরা সবাই।’’

রবিবার সারাদিন বৃষ্টি চলায় সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পান্ডুয়ার দমদমার বাসিন্দা সুভাষ ক্ষেত্রপাল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। তিনি বলেন, ‘‘আমি হৃদরোগী। প্রতি রবিবারেই বাসে হাসপাতালে আসি। আজ বাস বন্ধ থাকায় কয়েক বার গাড়ি বদল করে আসতে হয়েছে। যেতেও হবে একই ভাবে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচও বাড়ল।’’

Bus Bus stand Chuchura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy