আমপানে তাঁর ভেঙে যাওয়া বাড়ি এখনও এ ভাবেই পড়ে রয়েছে। দেখাচ্ছেন এসরাইল। —নিজস্ব িচত্র
তিন-তিন বার তিনি আবেদন করেছে। লাভ হয়নি। ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করেছেন। সমস্যা মেটেনি।
আমপানের পরে কেটে গিয়েছে চার মাস। বাগনান-২ ব্লকের মুগবেনাপুর পঞ্চায়েতের খাজুরনান গ্রামের ভিটেহারা এসরাইল আলি খান এখনও সপরিবারে আত্মীয়ের বাড়িতেই দিন কাটাচ্ছেন। একটি পয়সাও ক্ষতিপূরণ পাননি। ভেঙে পড়া বাড়ি মেরামত করতে পারেননি পেশায় ভ্যানচালক এসরাইল।
এখন তাঁর বাস্তুভিটে একটি ছোটখাটো ধ্বংসস্তূপ ছাড়া কিছু নয়। কোনওমতে পুরনো একটি ত্রিপল জোগাড় করে সেই ধ্বংসস্তূপ ঢেকে রেখেছেন এসরাইল। তাঁর খেদ, ‘‘প্রতিবার শুধু লিখিত আবেদন জমা করাই নয়, দিদিকে বলো-তে ফোন করেও বিষয়টি জানাই। আমাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুই পাইনি। আত্মীয়ের বাড়িতে জায়গা বেশি নেই। এই ভাবে কতদিন থাকব অন্যের বাড়িতে?’’
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রবীন ভৌমিক দাবি করেছেন,, ‘‘প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা সবাই ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।’’ তা হলে এসরাইল পেলেন না কেন? রবীনবাবু বলেন, ‘‘কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’
দুই সন্তান, স্ত্রী এবং মাকে নিয়ে টালির ছাউনি দেওয়া নিজের মাটির বাড়িতে বাস করতেন এসরাইল। গত ২০ মে আমপানে তাঁর বাড়ি ভেঙে পড়ে। ঝড়ের গতিপ্রকৃতি দেখেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, বাড়ি টিকবে না। বিপদ বুঝে বাড়ি ভেঙে পড়ার আগেই তিনি সপরিবারে পাশে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন।
আমপানের পরের দিন থেকেই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরির হিড়িক পড়েছিল। ব্লক অফিস সেই তালিকা প্রকাশ করে। বিতর্ক দেখা দেওয়ায় দ্বিতীয়বার তালিকা তৈরি হয়েছিল। তারপরে তৃতীয় বারও আবেদন নেওয়া হয়। কিন্তু এই কর্মযজ্ঞের মধ্যে এসরাইলের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। কোনও তালিকাতেই তিনি ঠাঁই পায়নি। ফলে, বাড়ি তৈরি করে ফিরে আসার স্বপ্ন তাঁর অধরাই থেকে গিয়েছে।
ভ্যান চালিয়ে কতই বা রোজগার তাঁর! এসরাইলের আক্ষেপ, ‘‘করোনা আবহেরাস্তায় যাত্রী সংখ্যা সে ভাবে বাড়েনি। রোজগার আগের থেকে কমে গিয়েছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। কীভাবে বাড়ি তৈরি করব? অন্যের বাড়িতে তো অনন্তকাল থাকা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy