ঘোষণা হওয়ার পর থেকে শুধুই চলছে সাজানো গোছানো। উঁচু করা হয়েছে প্ল্যাটফর্ম, বসেছে শেড। জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন আবার প্ল্যাটফর্মে চলছে পাথর বসানোর কাজ। এ কথায়, মডেল স্টেশন করার জন্য বহিরঙ্গে ভোল পাল্টানো চলছে। কিন্তু ভিতরের অবস্থা যে কে সেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বাগনানকে মডেল স্টেশন ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের বাগনান স্টেশন এখন যৌনকর্মীদের ঘাঁটি। স্টেশনের ওভারব্রিজের উপরে সকাল ১০টার নাগাদ গেলে দেখা যাবে, সার দিয়ে বসে আছেন যৌনকর্মীরা। অথচ এই ওভারব্রিজ দিয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা যাতায়াত করে। খুবই দৃষ্টিকটূ লাগে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যে অবশ্য পুলিশ তাঁদের তাড়িয়ে দেয়। তখন ওইসব যৌনকর্মীরা চলে যান মুরালিবাড়ে রেলওয়ে উড়ালসেতুতে। তবে তা সামান্য সময়ের জন্য। ফের তাঁরা চলে আসেন স্টেশনের ওভারব্রিজে।
এখানেই শেষ নয়। লেভেলক্রশিং থেকে স্টেশন পর্যন্ত রেল কর্তৃপক্ষ একটি রাস্তা তৈরি করেছেন। প্রতিদিন হাজার হাজার নিত্যযাত্রী এই রাস্তা ধরে স্টেশনে আসেন। কিন্তু স্টেশনে ওঠার মুখেই অবাধে চোলাই বিক্রি হচ্ছে। অভিযোগ, এ সব দেখেও চোখ বন্ধ করে থাকে পুলিশ। শুধুমাত্র রেলের জমির চৌহদ্দির মধ্যে কেউ যদি ভুলে শৌচকর্ম করে ফেলেন তাঁর কিন্তু রেহাই নেই। অভিযোগ, ওই ব্যক্তিকে টেনে আনা হয় রেল পুলিশের অফিসে। তাঁর কাছ থেকে মোটা টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সেই টাকা দিতে না পারলে ওই ব্যক্তিকে আটকে রাখা হয়। তাঁর পরিবারের লোকজন যদি তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারেন তো ভাল, নয়তো তাঁকে অন্য মামলা দিয়ে পাঠানো হয় আদালতে।
নিত্যযাত্রীদের দাবি, রেল লাইনের ধারে যাঁরা শৌচকর্ম করে তাঁদেরও ধরা উচিত, পাশাপাশি চোলাই ব্যবসা ও যৌনকর্মীদের আনাগোনা করতে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ-প্রশাসন।
রেল পুলিশের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, নিয়মিত চোলাই ঠেকে হানা দেওয়া হয়। যৌনকর্মীদেরও তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা ফের চলে আসেন। শৌচকর্ম করা প্রসঙ্গে রেল পুলিশের বক্তব্য, রেল লাইনের ধারে শৌচকর্ম করা বেআইনি। তা জেনেও অনেকে ইচ্ছে করে শৌচকর্ম করে থাকেন। শুধুমাত্র তাঁদের সতর্ক করার জন্য ধরে আনা হয়।