Advertisement
E-Paper

টোটো নয় রাস্তা চাই, বলছে হাওড়া পুরসভা

যে পুরসভা পরিবেশবন্ধু যান হিসেবে‌ টোটোকে স্বাগত জানিয়েছিল, সেই পুরসভাই এ বার টোটোর বাড়বাড়ন্ত রুখতে পুলিশকে নিয়ে টোটো প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযানে নামল। এমনটাই ঘটেছে হাওড়ায়। পুরসভা সূত্রে খবর, ক্ষমতা দখলের পরেই তৃণমূল বোর্ড শহরে ব্যাটারি-চালিত এই রিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তার আগে হাওড়া সিটি পুলিশের তরফেও রাজ্য পুলিশের কাছে আইন করে টোটোকে শহরে চালানোর ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১২
হাওড়ার পথে টোটোর ভিড়। — নিজস্ব চিত্র।

হাওড়ার পথে টোটোর ভিড়। — নিজস্ব চিত্র।

যে পুরসভা পরিবেশবন্ধু যান হিসেবে‌ টোটোকে স্বাগত জানিয়েছিল, সেই পুরসভাই এ বার টোটোর বাড়বাড়ন্ত রুখতে পুলিশকে নিয়ে টোটো প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযানে নামল।

এমনটাই ঘটেছে হাওড়ায়। পুরসভা সূত্রে খবর, ক্ষমতা দখলের পরেই তৃণমূল বোর্ড শহরে ব্যাটারি-চালিত এই রিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তার আগে হাওড়া সিটি পুলিশের তরফেও রাজ্য পুলিশের কাছে আইন করে টোটোকে শহরে চালানোর ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের তরফে ত্রিপুরার ব্যাটারি-চালিত রিকশা আইনের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, এ রাজ্যেও মোটর ভেহিক্‌লস আইন সংশোধন করে টোটো চালানো যায় কি না, তা দেখতে। কারণ, হাওড়ায় ওই পরিবেশবন্ধু যান খুব উপযোগী হবে।

কিন্তু পুলিশের সেই প্রস্তাব বিবেচনার আগেই পুরসভা শহরে টোটো চলার অনুমতি দিয়ে দেয়। ঘোষণা করে দেওয়া হয়, পুরসভার লাইসেন্স দফতরে টোটোর রেজিস্ট্রেশন হবে। এ জন্য একটা টাকা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে রুট ও ভাড়াও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। কিন্তু এই ঘোষণার পরেই দেখা যায়, পুরসভা রেজিস্ট্রেশন ফি নেওয়ার আগেই কয়েক হাজার টোটো হাওড়া শহরে নেমে পড়েছে। নির্দিষ্ট রুট ছাড়াই অলি-গলি-রাজপথ ভরে যায় এই তিনচাকা যানে। এমনকী, রাতারাতি শহরের বিভিন্ন জায়গায় গজিয়ে ওঠে টোটো বিক্রির দোকানও। আগে থেকেই ৪০-৫০ হাজার বেআইনি রিকশা শহরের রাস্তাঘাট দখল করে রেখেছিল, এর উপরে দিনের পর দিন টোটোর সংখ্যা বৃদ্ধি বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস তুলে দেয়। ব্যস্ত সময়ে যানজট হয়ে দাঁড়ায় নিত্য দিনের সমস্যা। মাথায় হাত পড়ে হাওড়া সিটি পুলিশ ও পুরসভার কর্তাদের।

নিয়ন্ত্রণের রাশ হাতে না রেখে শহরে টোটো চলার অনুমতি কার্যত যে বু্মেরাং হয়ে গিয়েছে, তা মানছেন হাওড়া পুরসভার কর্তারা। পুরসভার লাইসেন্স দফতরের মেয়র পারিষদ বিনোদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, টোটোর সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে। যত টোটো চলছে, তত রেজিস্ট্রেশনও করায়নি। নিয়ন্ত্রণের রাশ হাতে না রাখায় ফল খারাপ হয়েছে।’’

হাওড়া শহরের মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে সব জায়গায় টোটো তৈরি হচ্ছে, সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করে অবিলম্বে বন্ধ করতে ডিসি-কে (ট্রাফিককে) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, যে সব টোটো রেজিস্ট্রেশন করায়নি, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’

পুরসভা সূত্রে খবর, তাদের কাছে থাকা হিসেব অনুযায়ী এখনও ১৯০০ টোটোর রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। অথচ, চলছে প্রায় ২০ হাজার। টোটোর এই বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তিত হাওড়া সিটি পুলিশও। ডিসি (ট্রাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘টোটোর জন্য গোটা শহরটা ক্রমশ অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরা পুরো বিষয়টি রাজ্য প্রশাসন-সহ জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে জানিয়েছি। কিন্তু টোটো এখনও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।’’

তা হলে উপায়? নিয়ন্ত্রণের রাশ যাঁদের হাতে থাকার কথা, সেই রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আরটিএ)-র এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘টোটোকে মোটর ভেহিক্‌লস আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে সরকার এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। ওই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন উঠবে।’’

howrah mayor rathin chakraborty toto howrah traffic jam howrah city howrah bad road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy