Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কোর্ট লকআপে রাখার ঝক্কি বাড়ছে, দাগিদের ঠাঁই পুলিশের গাড়িতেই

একই দিনে একাধিক আসামিকে কোনও আদালতে হাজির করানোর থাকলে প্রথমে তাদের কোর্ট-লকআপে এনে রাখা হয়। সময় অনুযায়ী ডাক এলে তাদের পুলিশকর্মীরা আদালতে হাজির করেন।

 এ ভাবেই এজলাসে তোলা হয় অভিযুক্তদের। ফাইল চিত্র

 এ ভাবেই এজলাসে তোলা হয় অভিযুক্তদের। ফাইল চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ০৬:১২
Share: Save:

হুগলি জেলে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব থেকে শিক্ষা নিল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। আদালতে হাজিরার দিনে শিল্পাঞ্চলের কোনও দাগি আসামিকেই আর কোর্ট-লকআপে রাখার ঝুঁকি নিতে চাইছে না তারা। তাই ওই সময়ে দাগিদের ঠাঁই হচ্ছে পুলিশের গাড়িতেই। কড়া পুলিশি প্রহরাতেই তাদের রাখা হবে বলে কমিশনারেটের কর্তারা জানিয়েছেন।

কিন্তু কেন এই ঠাঁই বদল?

একই দিনে একাধিক আসামিকে কোনও আদালতে হাজির করানোর থাকলে প্রথমে তাদের কোর্ট-লকআপে এনে রাখা হয়। সময় অনুযায়ী ডাক এলে তাদের পুলিশকর্মীরা আদালতে হাজির করেন। চন্দননগর কমিশনারেটের কর্তাদের দাবি, আসামিদের মধ্যে বিরোধ থাকলে ওই সময়ে তাদের মধ্যে মারামারি বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তা ছাড়া, অনেক সময়েই ‘দাদা’-র সঙ্গে দেখা করতে এসে ভক্তকুল উৎপাত করে। এই দুই উপদ্রব এড়াতেই নতুন পন্থা।

সোমবারই চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়েছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতী নেপু গিরিকে। পুলিশ তাকে গাড়িতে এনে সোজা চুঁচুড়া পুলিশ লাইনে ঢুকিয়ে দেয়। পুলিশ লাইনে জোরদার নিরাপত্তা থাকায় নেপু ট্যাঁ-ফোঁ করতে পারেনি। নেপুর মতোই কাশী, রমেশ মাহাতো, হুলো-কেলো, আক্রম, টোটোনদের মতো হুগলি শিল্পাঞ্চলের ‘হেভিওয়েট’ দুষ্কৃতীদের জন্যও এখন এই বিশেষ দাওয়াইয়ের ব্যবস্থা করছে পুলিশ। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘কোর্ট লকআপে কোনও গোলমাল হলে বিচারক কড়া পদক্ষেপ করতে পারেন, সেই আশঙ্কা থাকেই। তা ছাড়া, ওখানে আসামির বাড়ির লোকজনও অযথা ভিড় করেন। সুযোগ বুঝে আসামি কখন চম্পট দেয়, সেই আশঙ্কাও থাকে। এ সব এড়াতেই এই ব্যবস্থা।’’

সম্প্রতি হুগলি জেলে দুষ্কৃতীদের বেনজির তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করেছেন পুলিশকর্তারা। জেলকর্মী এবং পদস্থ কর্তাদের শুধু মারধর নয়, ভাঙচুর করে জেলের ভিতরে ডিজেল ঢেলে আগুন পর্যন্ত ধরিয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিছুদিন আগের সেই ঘটনায় জেলের ভিতরে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাদের হাত লাগাতে হয়। তারপর থেকেই পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা জেলের ভিতরের পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে ও স্বাভাবিক রাখতে নানা পদক্ষেপ করছেন।

রমেশ, নেপু, টোটন, কাশী, হুলো, কেলো, আক্রমের মতো কুখ্যাত দুষ্কৃতী এবং তাদের বহু শাগরেদই এখন জেলে। ওইসব দাগি দুষ্কৃতী বাইরে থাকলে যেমন পুলিশের মাথাব্যথা, তেমনই জেলের ভিতর থেকেও তাদের উৎপাত সামলাতে হচ্ছে পুলিশকে। অন্য আসামিদের বাড়ির লোকজনের থেকে তারা বেপরোয়া ভাবে তোলা আদায়ও চালায় বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, জেলের অন্দরে নিত্য অশান্তিও লেগে রয়েছে।

কোর্ট লকআপে অশান্তি এড়াতে পুলিশের নতুন দাওয়াই শেষ বিচারে কতটা ঠিক, এখন সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Inmates Prison Van Notorious Criminal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE