বৈঠক: চুঁচুড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র
হুগলির যে কোনও ফেরিঘাট থেকে নৌকা বা ভুটভুটিতে উঠলেই এ বার থেকে যাত্রীদের পরতে হবে লাইফ-জ্যাকেট।
ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া ঘাটে জেটি-দুর্ঘটনার জেরে জেলার প্রতিটি ফেরিঘাটেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে চলেছে প্রশাসন। সেই প্রস্তুতির জন্যই শনিবার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশাল জেলার সব ক’টি পুরসভার চেয়ারম্যান, পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি-সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে চুঁচুড়ায় একটি বৈঠকে বসেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই জেলাশাসক জানিয়ে দেন, সব ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষকে মোট ২৭ দফা নির্দেশিকা মানতে হবে। অন্যথায় প্রশাসন আইনমাফিক ব্যবস্থা নেবে।
ওই ২৭ দফা নির্দেশিকার মধ্যেই রয়েছে সব যাত্রীদের জন্য লাইফ-জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখা, সব ফেরিঘাটকে সিসিটিভির আওতায় আনা, প্রতিটি ঘাটে বিশেষ গেট রাখা। কোনও নৌকা ঘাটে এলে সেখান থেকে সব যাত্রী না-নামা পর্যন্ত কেউই যাতে জেটি পর্যন্ত যেতে না-পারেন, তার জন্য গেট আটকানো থাকবে। নৌকা ফাঁকা হলে তবেই জেটিতে যাত্রীদের নিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি জেটিকেই পর্যায়ক্রমে কংক্রিটের করা হবে। নিরাপত্তার জন্য ফেরিঘাটগুলিতে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা থাকবেন। তাঁরা আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেবেন। এমনই সব নির্দেশ।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘লাইফ জ্যাকেট বা অন্যান্য খাতে যে খরচ হবে তা সংশ্লিষ্ট এলাকার পুরসভা বা পঞ্চায়েত সমিতিকে বহন করতে হবে। যে ইজারাদারের তরফে কোনও গাফিলতি দেখা যাবে, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেবে। যত শীঘ্র সম্ভব নির্দেশিকাগুলি কার্যকর করার কাজ শুরু হবে।’’
গত বুধবার জোয়ারের তোড়ে তেলেনিপাড়া ঘাটের বাঁশের জেটি ভেঙে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত ১৪ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন সাত জন। দুর্ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মা প্রকাশ করে তদন্তের নির্দেশ দেন। এই ধরনের দুর্ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না হয়, সে ব্যাপারেও প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপরই হুগলি জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। ওই ঘাটের ইজারাদার-সহ মোট চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানতে পারে, তেলেনিপাড়া ঘাটের জেটিটির রক্ষণাবেক্ষণ হতো না। সেই গাফিলতিই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এ দিনের বৈঠকে স্থির হয়েছে, যে সব নৌকা বা ভুটভুটি পারাপারের জন্য ব্যবহার হবে, তা উপযুক্ত কিনা, সে সংক্রান্ত শংসাপত্র জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ঘাটের ইজারাদারকে নিয়ে আসতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy