Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
আরামবাগ মহকুমায় তিল চাষের জমি দখল করে নিয়েছে বাদাম

বোঝানোয় ঘাটতি, বলছেন চাষিরা

তিল চাষের ক্ষেত্রে আরামবাগ মহকুমা গুরুত্ব ক্রমশ হারাচ্ছে। সেই সঙ্গে কদর বাড়ছে বাদামের। তিল চাষের ক্ষেত্রে চাষিদের আগ্রহ কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১০
Share: Save:

তিল চাষের ক্ষেত্রে আরামবাগ মহকুমা গুরুত্ব ক্রমশ হারাচ্ছে। সেই সঙ্গে কদর বাড়ছে বাদামের।

তিল চাষের ক্ষেত্রে চাষিদের আগ্রহ কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মহকুমায় তিলের চাষ দ্রুত কমছে। বাদাম ও সরষের ক্ষেত্রে চাষিরা যেমন উন্নত প্রথায় চাষ করেন তিলের ক্ষেত্রে সেই চিরাচরিত অনাদরে চাষ প্রথাই ধরে রেখেছেন। ফলে এই বিপর্যয়। পুরনো ঐতিহ্য যাতে ফেরাতে তিলের বহুবিধ ব্যবহারের দিক নিয়ে প্রচার করা হবে।’’

মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, গত পাঁচ বছরে মহকুমায় তিল চাষের এলাকা ১২ হাজার ৬০০ হেক্টর থেকে কমে হয়েছে ৯ হাজার হেক্টর। ওই সময়ের মধ্যে বাদাম চাষের এলাকা ৮ হাজার হেক্টর থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার হেক্টর। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিলের জায়গা দখল করেই বাদাম চাষ হচ্ছে।

তিল চাষ চাষে কেন উৎসাহ হারাচ্ছেন চাষিরা? আরামবাগের তিরোলের চাষি বিমল মণ্ডল বলেন, ‘‘তিল হেলাফেলার চাষ বলেই আমরা জানি। বাদাম, সরষে-সূর্যমুখীর মতো তৈল বীজ নিয়ে কৃষি দফতর যেমন প্রচার চালায় তেমনি তিলের ক্ষেত্রে কিছু হয় না। ভাল প্রজাতির বীজও মেলে না। সে ক্ষেত্রে বাদামে ভাল লাভ। তাই তিল চাষ করে কেন জমি আটকে রাখব।’’ পুরশুড়ার শ্যামপুরের শঙ্কর রায় বলেন, ‘‘ভোজ্য তেল হিসেবে তিলের কদর নেই। দাম ওঠানামা করে। বর্ষার মুখে আদায় করাও কষ্টকর। সেক্ষেত্রে বাদামের সুনির্দিষ্ট দাম থাকে। আদায় করা সহজ।’’ গোঘাটের কুমুড়শা গ্রামের শেখ সফিকুলের অভিযোগ, ‘‘কৃষি দফতর তিল চাষে উন্নত প্রযুক্তির সন্ধান দিতে পারেনি। চিরাচরিত প্রথাতেই তিল চাষ হয়ে আসছে। সে জায়গায় বাদাম চাষই ভরসা।’’

চাষিরা জানিয়েছেন, এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা। ফসল উঠতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন মাস। বিঘা পিছু গড়ে সাড়ে তিন কুইন্টাল বাদাম মেলে। কুইন্টাল প্রতি ৩৫০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকা দাম পাওয়া যায়। সেচ ও সারের প্রয়োজনও কম হয়।

আলু চাষের পর ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সেই জমিতেই বাদামের বীজ বপন করা হয়। অন্য দিকে এক বিঘা জমিতে তিল চাষের খরচ প্রায় তিন হাজার টাকা। ফসল ওঠে তিন মাস বাদে। এক বিঘা জমি থেকে প্রায় দেড় কুইন্টাল তিল মেলে। দামের নিশ্চয়তা নেই। কোনও দিন কুইন্টাল প্রতি ৪ হাজার টাকা তো দু’দিন পরেই ৩ হাজার টাকা। দু’টি চাষের ক্ষেত্রেই জল এবং সারের প্রয়োজন কম হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Peanut farming Arambag Peanut
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE