গোঘাটের ভিকদাস মাঠে ‘নাড়া’ পোড়ানো হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র
আমপানের ক্ষত এখনও শুকোয়নি। এ বার তার সঙ্গে জুডল ‘নাড়া’ পোড়ার দূষণ!
লকডাউনে শ্রমিক মেলেনি। ঝড়বৃষ্টিতে মাঠেই নষ্ট হচ্ছিল পাকা বোরো ধান। এ বার তাই ধান কাটার ক্ষেত্রে কাস্তের ব্যবহার হয়নি বললেই চলে। যন্ত্রে ধান কাটা ছাড়া উপায় ছিল না চাষিদের। ফলে, নাড়ার (কেটে নেওয়ার পরে ধান গাছের অবশিষ্ট অংশ) স্তূপ হয়ে জমছিল হুগলি জেলার মাঠময়। আমন চাষের আগে এখন সেই সব নাড়া পুড়িয়ে দিচ্ছেন চাষিরা। কৃষি দফতরের বিরুদ্ধে নজরদারির অভিযোগ তুলছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
সদ্য আমপানে অনেক সবুজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেই ক্ষত মেরামতে জেলাজুড়ে বৃক্ষরোপণে নেমেছে প্রশাসন। অথচ, এর মধ্যে জেলার নানা প্রান্তে যে ভাবে নাড়া পোড়ানো বাড়ছে, তাতে প্রমাদ গুনছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের অনেকে মনে করছেন, গত বছর কৃষি দফতরের লাগাতার প্রচার এবং নজরদারিতে আমন ও বোরো ধানের নাড়া পোড়ানো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ হয়েছিল। এ বার কৃষি দফতরের প্রচার, শিবির, কৃষকদের উপর চাপ— সব উধাও। বৃষ্টিতে ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়ে জমিতে পড়ে থাকা খড়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন চাষি। ফলে, খড় দাউ দাউ করে জ্বলে না গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে ধোঁয়ায় ভরে থাকছে এলাকা।
নাড়া পোড়ানোর কথা অস্বীকার করেননি জেলা কৃষি আধিকারিক অশোক তরফদার। তবে তিনি বলেন, “অধিকাংশ নাড়া এ বার দফায় দফায় বৃষ্টিতে পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ জমিতে ছড়িয়ে দিয়েছেন বা তুলে নিয়েছেন। কিছু কিছু জায়গায় অবশ্য নাড়া পোড়ানো হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। সে সব জায়গায় চাষিরা যাতে নাড়া না-পোড়ান তা নিয়ে অনুরোধ করছি, প্রচার চালাচ্ছি।” নাড়া পোড়ানো নিয়ে সচেতনতা এবং নজরদারির অভাবের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, “আমপান সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব, ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি কাজকর্মের জন্য ব্যস্ত থাকায় সার্বিক ভাবে নজরদারির কিছুটা হয়তো ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নাড়া পোড়ানোর ছবিটা আরামবাগ মহকুমাতেই বেশি। জেলার ধনেখালি, পোলবা, বলাগড়-সহ বেশ কিছু ব্লকে অন্তত ৫০ শতাংশ নাড়া পোড়ানো কমেছে। লাগাতার প্রচার, সচেতনতা শিবির ইত্যাদির মাধ্যমে এটা নির্মূল করার প্রক্রিয়া জারি থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy