Advertisement
০৪ মে ২০২৪

‘তোলা’ চাওয়ায় বেলুড়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর

সুমিত ডালমিয়া নামের ওই এলাকার এক সক্রিয় তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, হাওড়া পুরসভার ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সীমা ভৌমিক ও তাঁর স্বামী দিবাকর চক্রবর্তী এই কাণ্ড করেছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সীমার দাবি, ‘‘কেউ কোনও টাকা চায়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫৮
Share: Save:

পুরসভার ফাঁকা জমিতে গণেশ পুজো ঘিরে তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। টাকা না-পেয়ে পুজোর ব্যানার ছিঁড়ে দিয়ে মারধরের অভিযোগও উঠল ওই কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধ্যায় বেলুড়ের গিরিশ ঘোষ রোডের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার সিসিটিভি-র ফুটেজেও দেখা গিয়েছে যে ওই কাউন্সিলরের স্বামী হাতে হকি স্টিক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

সুমিত ডালমিয়া নামের ওই এলাকার এক সক্রিয় তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, হাওড়া পুরসভার ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সীমা ভৌমিক ও তাঁর স্বামী দিবাকর চক্রবর্তী এই কাণ্ড করেছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সীমার দাবি, ‘‘কেউ কোনও টাকা চায়নি। বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়ার মদতেই সুমিত সব কিছু করছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগেও সেটা লিখেছি।’’ বিষয়টি শুনে বৈশালীদেবী বলেন, ‘‘মদত দেওয়ার তো কিছু নেই। সীমা কয়েক দিন আগে আমার নামে, আর এখন মেয়রের নামে মিথ্যা কিছু অভিযোগ লিখে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন। উনি জনপ্রতিনিধি না দলের মধ্যে গন্ডগোল করতে এসেছেন, বুঝতে পারছি না।’’

সুমিত জানান, ১০ বছর ধরে গিরিশ ঘোষ রোড গণেশ পুজো কমিটি এলাকায় একটি পুজো করে। পুরসভার একটি ফাঁকা জায়গাতেই পুজো হয়। ২৫ অগস্ট পুজোর জন্য তিনি জমির অনুমতি চেয়ে পুরসভায় আবেদন করেছেন। অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর সীমাদেবী ওই জমিতে পুজো করার জন্য কয়েক হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু তা দিতে রাজি না-হতেই আপত্তি করেন সীমাদেবী।

সুমিত বলেন, ‘‘পুজোর ব্যানার লাগাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কাউন্সিলর এসে বাধা দেন। ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয়। এর পরে ওঁর স্বামী হকি স্টিক নিয়ে এসে আমায় মারধর করেন। পরে আমার দোকানেও হামলা চালাতে যান।’’ যদিও সীমা জানান, স্থানীয়েরাই পুজোটি করেন। কিন্তু গত বছর সুমিত কমিটিতে ঢুকে নিজের নামে পুজোর প্রচার করছেন। টাকা তুলছেন।

সীমা বলেন, ‘‘পুজো হবে এলাকার কমিটির নামে। কেউ নিজের নামে করবেন কেন, তাই আপত্তি করেছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, সুমিতের নিজের নামে লেখা ব্যানার লাগাতে বারণ করায় তাঁকে অশ্লীল কথা বলে ধাক্কা মারে সুমিত।

কিন্তু দিবাকর কেন হকি স্টিক নিয়ে এলাকায় ঘুরছিলেন? সীমা বলেন, ‘‘আমাকে হেনস্থা করেছে বলেই ওঁর মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। তবে কাউকে মারেনি। কিন্তু হকি স্টিক নিয়ে ঘোরা ঠিক হয়নি।’’ তবে ঘটনার দোষ বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়ার ঘাড়েই চাপিয়েছেন সীমা। তিনি বলেন, ‘‘সুমিত পুজোর নামে টাকা তুলছে। আর বিধায়ক তাঁকে নিয়ে ঘুরছেন। আসলে মন্ত্রী অরূপ রায় পুজোর উদ্বোধন করবেন— এ কথা প্রচার হতেই, বিধায়ক এ সব করিয়েছেন।’’

বৈশালীদেবী বলেন, ‘‘অরূপবাবু জেলা সভাপতি, তাঁর নামে প্রচার হলে আমার আপত্তি থাকবে কেন। আমি তো চাই উনি সব অনুষ্ঠানে আসুন। সীমা কি আমাদের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধাতে চাইছেন?’’ অন্য দিকে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘পুজোয় যেতে পারব না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম। সীমাকে আগেও এক বার সাবধান করেছি। এ বারও সঠিক অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE