Advertisement
E-Paper

কী ভাবে খুন, জানাল ধৃত

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট তৈরি হওয়ার পরে তার আওতাধীন বিভিন্ন থানা এলাকায় যে ভাবে একের পর এক অপরাধমূলক কাজকর্ম সামনে আসছে, তাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। কমিশনারেট হয়ে লাভ কী হল, এই প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে নিরাপত্তাহীনতাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় দেড় দিন। কিন্তু রবিবার বিকেল পর্যন্ত ব্যান্ডেলের ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের কাউকে ধরতে পারল না পুলিশ। তবে, এক সপ্তাহ আগে শ্রীরামপুরের বিবিরবেড়ে এলাকায় যুবক অতনু ঘোষ ওরফে মন্টুকে খুনে ধৃত দুষ্কৃতী সঞ্জয় দে এ দিন পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রকাশ্যে দোষ কবুল করেছে। কী ভাবে মন্টুকে খুন করা হয়, সে কথাও জানিয়েছে।

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট তৈরি হওয়ার পরে তার আওতাধীন বিভিন্ন থানা এলাকায় যে ভাবে একের পর এক অপরাধমূলক কাজকর্ম সামনে আসছে, তাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। কমিশনারেট হয়ে লাভ কী হল, এই প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে নিরাপত্তাহীনতাও। পুলিশ অবশ্য দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। বিবিরবেড়ের খুনের ঘটনায় জড়িত বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন কমিশনারটেরের এক কর্তা। একই আশ্বাস মিলেছে ব্যান্ডেলের ঘটনার ক্ষেত্রেও।

গত ৮ জুলাই রাতে বিবিরবেড়ে একটি ক্লাবের সামনে মাথায় গুলি করে খুন করা হয় মন্টুকে। ১১ তারিখে শ্রীরামপুরের তারাপুকুরের বাসিন্দা সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে ধৃত বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। রবিবার দুপুরে শ্রীরামপুর থানার তদন্তকারী অফিসাররা সঞ্জয়কে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। তার মুখ ঢাকা ছিল। সঞ্জয়ের কথা শুনতে এলাকায় ভিড় জমে। সঞ্জয় তদন্তকারীদের জানায়, ওই রাতে মোটরবাইকে চেপে তারা তিন জন আসে। মন্টু ক্লাবের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিল। বাইক থেকে নেমে সঞ্জয়ই তাঁকে ডাকে। মন্টু এগিয়ে আসতেই তাঁকে গুলি করা হয়। মন্টু কোথায় দাঁড়িয়ে গ‌ল্প করছিলেন, কোন জায়গায় তাঁকে গুলি করা হয়— সবই দেখিয়ে দেয় সঞ্জয়।

তবে, ধৃতের দাবি, ডেকে আনলেও গুলি সে করেনি। গুলি করেছিল অন্য এক দুষ্কৃতী। তবে, তার নাম ঘটনাস্থলে জানায়নি সঞ্জয়। পুলিশের দাবি, খুনের পরে সে দিন দুষ্কৃতীরা একটি বোমাও ছোড়ে। সেটি ফাটেনি। সঞ্জয়রা বাইকে চেপে পালায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে না-ফাটা বোমাটি উদ্ধার করে।

গত ৩০ এপ্রিল ওই এলাকাতেই অজয় রায়ভৌমিক ওরফে দেবু নামে এক জমি-ব্যবসায়ী খুন হন। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দেবুর সঙ্গে সন্দীপ নন্দী নামে এক দুষ্কৃতীর যোগাযোগ ছিল। সন্দীপকে বার্তা দিতেই সুমন নামে এক দুষ্কৃতীর দলবল দেবুকে খুন করে। অন্য দিকে, দেবুর সঙ্গে মন্টুর বিরোধ ছিল। দেবু খুনে মন্টু দুষ্কৃতীদের সাহায্য করেছিলেন, এই ভাবনা থেকে বদলা নিতে মন্টুকে খুন করে সুমনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। ধৃত সঞ্জয় সেই গোষ্ঠীরই বলে পুলিশের দাবি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, সঞ্জয়কে জেরা করে বাকি দুষ্কৃতীদের হদিস মিলবে।

তবে দু’মাসের ব্যবধানে পর পর দু’টি খুনের ঘটনায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত। সন্ধের পর থেকেই রাস্তাঘাট কার্যত ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে বাসুদেব ঘোষ বলেন, ‘‘দেবু খুনের পরে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর হলে হয়তো দ্বিতীয় খুনটা হতো না।’’ সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় নস্কর নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘রাত ৮টার পরে মানুষ বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। নিরাপত্তার অভাব বোধ হচ্ছে।’’ মন্টুর মামা চন্দন দে-ও নিরাপত্তার অভাবের কথা জানান। তবে গত কয়েক দিন ধরে পুলিশের টহল বেড়েছে বলে এলাকাবাসী জানাচ্ছেন।

পুলিশি টহল শুরু হয়েছে ব্যান্ডেলের মসজিদপাড়াতেও। শুক্রবার রাতে ওই এলাকার ব্যবসায়ী ব্রিজেশ সিংহকে বাড়ি থেকে ডেকে বের করে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। তার পরেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।

Murder Bandel Businessman ব্যান্ডেল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy