Advertisement
E-Paper

ভোট পরবর্তী সংঘর্ষ চলছে হুগলি জেলাতে

ভোট পরবর্তী হিংসা যাতে না হয় সে জন্য শাসক ও বিরোধী উভয় দলের তরফে তাঁদের দলের কর্মী-সমর্থকদের সংযত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, উভয় দলের শীর্ষ নের্তৃত্বের সেই পরামর্শ বা হুঁশিয়ারি কোনও কাজেই আসেনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৬ ০৩:৪৪

ভোট পরবর্তী হিংসা যাতে না হয় সে জন্য শাসক ও বিরোধী উভয় দলের তরফে তাঁদের দলের কর্মী-সমর্থকদের সংযত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, উভয় দলের শীর্ষ নের্তৃত্বের সেই পরামর্শ বা হুঁশিয়ারি কোনও কাজেই আসেনি।

অন্য জেলার মতো এই জেলায়ও ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই বিরোধীদের উপর একতরফা ভাবে হামলা চা‌ল‌ানোর অভিযোগ উঠছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। মারধর, বাড়ি-দোকান ভাঙচুর, হুমকি কিছুই বাদ নেই। শনিবার কোন্নগরের মনসাতলায় বিজয় মিছিলের পরে সিপিএমের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া বা আরামবাগের তিরোলে সিপিএম পার্টি অফিসে ভাঙচুর, এক ব্যবসায়ীকে তুলে দেওয়া-সহ নানা অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সব ক্ষেত্রে তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে বিরোধীদের বিরুদ্ধে যে পাল্টা অভিযোগ উঠছে না তা নয়। শনিবার জাঙ্গিপাড়ার রাধানগর পঞ্চায়েতের মাঝেরপাড়ায় ‘হামলা রুখতে’ ‘পাল্টা’ রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সিপিএমের লোকজন। তাতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দু’পক্ষের কয়েক জন আহত হন। থানায় অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিপিএমের ৫ জন কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন মহিলাও আছেন। তৃণমূলের কেউ অবশ্য ধরা পড়েনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুরে তৃণমূল এলাকায় বিজয় মিছিল বের করেছিল। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, মিছিল শেষে তৃণমূলের কিছু লোক এক সিপিএম কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। বাধা দিলে মারামারি শুরু হয়। তৃণমূলের তরফে লিখিত অভিযোগ পেয়ে এক মহিলা-সহ সিপিএমের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে জাঙ্গিপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করা হয়। রবিবার আদালতে তোলা হলে তাঁদের ১৪ দিনের জেলহাজ হয়। সিপিএম নেতা হরপ্রসাদ সিংহরায়ের অভিযোগ, ‘‘জাঙ্গিপাড়া জুড়ে শাসক দল সন্ত্রাস করছে। রাধানগরে আমাদের লোকেরা হামলার প্রতিরোধ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ একতরফা ব্যবস্থা নিল। ওদের লোকজনকে ধরা হয়নি। আমাদের আক্রান্ত মহিলার সঙ্গে পুলিশ কথা পর্যন্ত বলেনি।’’ পুলিশের জানিয়েছে, সিপিএমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কোথাও গোলমাল হলে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। এ ক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই অন্যথা হবে না।’’

এ সবের পাশাপাশি হুগলি জেলায় তৃণমূলের দ্বন্দ্বও পিছু ছাড়ছে না। রবিবার দুপুরে ধনেখালিতে তৃণমূলের বিজয় মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল দলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

তৃণমূ‌ল সূত্রের খবর, এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ধনেখালির গোপীনাথপুর ২ পঞ্চায়েতের চৈতন্যবাটি এলাকায় তৃণমূলের বিজয় মিছিল বের হয়। দলের শ’দুয়েক কর্মী-সমর্থক তাতে সামিল হন। জায়গাটি তারকেশ্বর বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত। অভিযোগ, মিছিল পাঠানপাড়ার কাছে আসতেই জনা কুড়ি লোক হামলা করে। হামলাকারীদের হাতে ছিল লাঠিসোঁটা, টাঙ্গি-সহ নানা অস্ত্র। আচমকা আক্রমণে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পঞ্চায়েত সদস্য নুপুর মালিক-সহ অন্তত ৪ জন জখম হন। পার্থসারথি খাঁড়া নামে এক তৃণমূল কর্মীকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ধনেখালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, এ দিন যাঁরা মিছিল বের করেছিলেন তাঁরা ধনেখালি ব্লক তৃণমূল সভাপতি সাকায়েত হোসেনের লোকজন বলে পরিচিত। সাকায়েত কোনও মন্তব্য না করলেও তাঁর ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে ভিড়েছে, এমন লোকজনই হামলা চালিয়েছে।’’ শুধু ধনেখালি নয়, চণ্ডীতলায় সাংসদ ঘনিষ্ঠ এক নেতার সঙ্গে বিধায়কের অনুগামী এবং নেতার দলবলের গোলমালকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধ্যা থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। রবিবার গোলমাল সামাল দিতে সেখানে যান জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব। দু’পক্ষের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন তিনি। ধনেখালিতে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। কেউ দোষ করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’

Post poll violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy