তালাবন্ধ: বন্ধ কারখানার গেট। —নিজস্ব চিত্র।
দূষণ বিধি মানা হয়নি। এই অভিযোগে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের নির্দেশে বুধবার রিষড়ায় একটি রবার কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল। আর এমন অবস্থার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকেই দুষছেন শ্রমিকরা।
বেশ কয়েক বছর আগে রং তৈরির বড় একটি কারখানা ভেঙে পৃথক চারটি কারখানা হয়। তার মধ্যে ওই রবার কারখানাটিও রয়েছে। রিষড়ার রেল লাইনের ধারের ওই কারখানায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় দু’শো শ্রমিক আছেন।
কারখানা ও প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তরফে কারখানা পরিদর্শনে আসে। তখনই দফতরের অফিসারেরা দূষণের মাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। এর পরে গত মার্চ এবং মে মাসে কারখানা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। শেষ পর্যন্ত, পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত আইনে দূষণ বিধি না মানার কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি ওই বোর্ডের তরফে হুগলির জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়ে কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চিঠি পেয়ে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল এ ব্যাপারে শ্রীরামপুর মহকুমাশাসকের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠান। এর পরেই কারখানাটি বন্ধের তোড়জোড় শুরু হয়। তার জেরে বুধবার থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
কারখানার আইএনটিটিইউসি সংগঠনের সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ এখন বলছেন, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ওই রিপোর্ট কেন তাঁরা কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডে পাঠালেন না, বোধগম্য হচ্ছে না। কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই যে এমনটা হল, এটা পরিস্কার।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দূষণ বিধি ঠিক করার দায়িত্বে যে বা যাঁরা ছিলেন, তাঁদের ধরা হোক। শ্রমিকরা যে বেকায়দায় পড়লেন, এ জন্য তাঁরা দায় এড়াতে পারেন না।’’
অনিরূদ্ধ রায় নামে এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তরফে কারখানা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। সমস্যা ঠিকভাবে মেটানো হয়েছিল কি না, সেটাই প্রশ্ন।’’ তাঁর কথায়, ‘কারখানার সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে যুক্ত আরও অনেকে বেকায়দায় পড়লেন।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ মানেননি। কারখানার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর সেনের বক্তব্য, দূষণ নিয়ন্ত্রণের সমস্ত বিধিই মানা হয়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ছাড়পত্র দিয়েছে। যে কোনও কারণেই হোক কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ একটি নমুনা সংগ্রহ করে বিধি না মানার কথা বলছে। বিভিন্ন জায়গায় ৪৫টি কারখানায় একই ধরনের নমুনা সংগ্রহ করে ৩০টির ক্ষেত্রে একই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy