Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কাজ বন্ধ ডানকুনির চিপস কারখানায়

শ্রীরামপুরের উপ-শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে আমরা বৈঠকে ডেকেছি। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কোনও সমাধান সূত্র বের করা যায় কিনা, সেই চেষ্টা করা হবে।’’ কারখানার ম্যানেজার দেবাশিস দাসের দাবি, ‘‘বাজার চড়া। শ্রমিকেরা যতটা বেতন বৃদ্ধির দাবি করছেন, তা মানা যাচ্ছে না। শ্রম দফতরকে সব জানিয়েছি।’’

প্রতিবাদ: কারখানার বাইরে বিক্ষোভ কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদ: কারখানার বাইরে বিক্ষোভ কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডানকুনি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৮:৩০
Share: Save:

ফের হুগলি শিল্পাঞ্চলে এক কারখানায় আঁধার ঘনাল!

মজুরি বৃদ্ধির দাবি না-মেটায় বুধবার থেকে কাজ বন্ধ করে দিলেন ডানকুনির চাকুন্দির একটি আলুর চিপস তৈরির কারখানার শ্রমিকেরা। ফলে, বন্ধ রইল উৎপাদন। দাবি পুরোপুরি না-মেটা পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে শ্রমিকেরা জানিয়েছেন। এই নিয়ে মাস দেড়েকের মধ্যে এই শিল্পাঞ্চলের তিনটি কারখানায় (গোন্দলপা়ড়া জুটমিল, ইন্ডিয়া জুটমিল, জয়শ্রী টেক্সটাইলস) কাজ বন্ধ হল।

শ্রীরামপুরের উপ-শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে আমরা বৈঠকে ডেকেছি। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কোনও সমাধান সূত্র বের করা যায় কিনা, সেই চেষ্টা করা হবে।’’ কারখানার ম্যানেজার দেবাশিস দাসের দাবি, ‘‘বাজার চড়া। শ্রমিকেরা যতটা বেতন বৃদ্ধির দাবি করছেন, তা মানা যাচ্ছে না। শ্রম দফতরকে সব জানিয়েছি।’’

চাকুন্দির ওই কারখানাটিতে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করেন। সেখানে সংস্থার নিজস্ব ব্র্যান্ডের চিপস ছাড়াও বাজার চলতি অন্য সংস্থার চিপস তৈরির বরাতও নেওয়া হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, প্রতি তিন বছর অন্তর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি হয়। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। কিন্তু এখনও নতুন চুক্তি হয়নি। মঙ্গলবার নতুন চুক্তির জন্য কারখানায় শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের আলোচনায় বসার কথা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ উপস্থিত না-থাকায় বৈঠক ভেস্তে যায়। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকেরা বুধবার সকাল থেকে কাজ করা বন্ধ করে দেন। অন্য কাজে ব্যস্ততার কারণে ওই বৈঠক হয়নি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।

ওই কারখানার দশ বছর কাজ করছেন শেখ আমন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এখানে শ্রমিকেরা প্রতিদিন ১৬৩ টাকা থেকে সর্বাধিক ২৪০ টাকা হারে মজুরি পান। কর্তৃপক্ষ নতুন চুক্তিই করছে না। আমাদের সংসার চালানোই এখন দায় হয়ে পড়েছে। তাই প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’ কারখানার তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা শেখ বলজিৎ বলেন, ‘‘সব জিনিসের বাজারদর বাড়ছে। পুরনো চুক্তিতে তিন বছরে ৯০ টাকা বেড়েছিল। এ বার কর্তৃপক্ষ বলছেন, সেটা ৭৫ টাকা হবে। শ্রমিকেরা তা মানছেন না।’’ কারখানা কর্তা দেবাশিসবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘আলুর দাম ২৫ টাকা কেজিতে ঠেকেছে। সব জিনিসের বাজার চড়া। গতবার পরিস্থিতি ভাল ছিল বলে ৯০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। পরিস্থিতি এ বার খুব খারাপ। ৭৫ টাকার বেশি শ্রমিকেরা দাবি করলে কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। ওঁদের জন্যই চুক্তি কার্যকর করা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Production Salary Hike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE