এ যেন এক যাত্রায় পৃথক ফল!
হাজিরা খাতায় কারচুপি রুখতে এবং স্বচ্ছতা আনতে কয়েক দিন আগেই হাওড়া পুরসভায় চালু হয়েছে বায়োমেট্রিক উপস্থিতি ব্যবস্থা।
প্রত্যেক স্তরের কর্মীর জন্যই এই ধরনের ব্যবস্থা চালুর কথা বলেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত মঙ্গলবার আচমকা পুর কমিশনারের একটি নির্দেশেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
ওই নির্দেশে বলা রয়েছে, সকলের জন্য এই নিয়ম নয়। নির্দিষ্ট কয়েকটি দফতরের কর্মীদের একাংশকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে না। তাঁরা পুরনো নিয়ম মতো হাজিরা খাতায় সই করলেই চলবে।
বুধবার সকালে পুর কমিশনারের এই নির্দেশ কর্মীরা জানতে পেরে
ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দুপুরে বেশ কয়েক জন কর্মী দলবদ্ধ ভাবে কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
কর্মীদের অভিযোগ, পুরসভার কাজে গতি আনতে এবং উপস্থিতিতে স্বচ্ছতা আনতে যে ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তা সকল কর্মীর জন্যই সমান ভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। কিন্তু তা না করে পুর কমিশনার ‘তুঘলকি’ আচরণ করছেন। এক কর্মী বলেন, ‘‘সকলে একই অফিসের কর্মী। কিন্তু এক এক জনের জন্য এক এক রকম নিয়ম। এটা ঠিক নয়।’’
পুরকর্মীদের আরও অভিযোগ, গত মঙ্গলবার পুর কমিশনার যে নির্দেশ জারি করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারম্যান-সহ সব মেয়র পারিষদের অফিসে এগ্জিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা
ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আরও বলা হয়, মেয়র ও কমিশনার অফিসের সব কর্মীই পুরনো পদ্ধতি মতো হাজিরা খাতায় সই করবেন। এ নিয়ম নির্দিষ্ট ন’জন নিরাপত্তারক্ষীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য থাকবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরেই বিভিন্ন মেয়র পারিষদের দফতর থেকে
পুর কমিশনারের কাছে আবেদন আসতে শুরু করে যে, তাঁদের কয়েক জন কর্মীকে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি থেকে ছাড় দিতে হবে। এর পরেই প্রাথমিক ভাবে কমিশনার ওই নির্দেশ জারি করেন বলেই মনে করছেন পুর কর্মীদের একাংশ। আর তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন পুরসভার একাংশ কর্মী। তাঁরা আবার শাসকদলেরই একটি অংশের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
এ বিষয়ে পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘‘এটি
পুরসভার অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে যা বলার মেয়রই বলবেন।’’ মেয়র রথীন চক্রবর্তী অবশ্য বলেন,
‘‘এমন নিয়ম জারি হয়েছে তা-ই তো জানতাম না। বিষয়টি পরে জেনেছি। বিষয়টি মেয়র পারিষদদের বৈঠকে আলোচনা হবে। সেখানে আমি জানিয়ে দেব, সকলকেই সময় মেনে অফিসে
কাজ করতে হবে। কারও দফতরের কোনও কর্মীই আলাদা ছাড়
পাবেন না।’’
তবে এ দিন পুরকর্মীদের একাংশ যে ভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাতে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘আমি পুরসভার শীর্ষ কর্তা। যে কর্মীরা বিষয়টিতে আপত্তি তুলেছেন, তাঁরা তো ভদ্র ভাবেও বলতে পারতেন। আমি নিশ্চয় তাঁদের কথা শুনতাম, ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু ওঁরা যে ব্যবহার করেছেন, তা অপমানজনক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy