Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Gondalpara Jute Mill

বেতন মেলেনি, বন্ধ গোন্দলপাড়ার জরুরি বিভাগ

শ্রমিকদের অভিযোগ, গত ডিসেম্বর মাস থেকে প্রায় চার মাস ধরে তারা বেতন পাচ্ছেন না।

সমস্যা: বকেয়া বেতনের দাবিতে বুধবার আন্দোলনে গোন্দলপাড়া জুটমিলের জরুরি বিভাগের শ্রমিকরা। ছবি: তাপস ঘোষ

সমস্যা: বকেয়া বেতনের দাবিতে বুধবার আন্দোলনে গোন্দলপাড়া জুটমিলের জরুরি বিভাগের শ্রমিকরা। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২০ ০১:৫৪
Share: Save:

বকেয়া বেতনের দাবিতে ফের আন্দোলনে নামলেন গোন্দলপাড়া জুটমিলের জরুরি বিভাগের শ্রমিকরা। বুধবার সেই আন্দোলনের জেরে বন্ধ ছিল কাজ। এই জরুরি পরিষেবার কাজ বন্ধ হয়ে গেলে, শ্রমিক মহল্লার বাসিন্দারা আদৌ জল আর আলো পাবেন কি না, এখন সেটাই প্রশ্ন।

২০১৮ সালের ২৭মে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয় গোন্দলপাড়া জুটমিলে। তার জেরে মিলের প্রায় ৫০০০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। তবে মিলের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ জরুরি বিভাগের ৭০ জন শ্রমিক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার মধ্যে রয়েছেন বিদ্যুৎ, পাহারাদার, সাফাইকর্মী এবং পাম্প বিভাগের কর্মীরা।

শ্রমিকদের অভিযোগ, গত ডিসেম্বর মাস থেকে প্রায় চার মাস ধরে তারা বেতন পাচ্ছেন না। কিন্তু পরিষেবা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এখন আর বিনা বেতনে কাজ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।

মিল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও সুরাহা না পেয়ে অবশেষে শ্রমিকরা স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসন, বিধায়ক ও চন্দননগরের শ্রম কমিশনারের দ্বারস্থ হন। কিন্তু তাঁদের অনুরোধও শোনেননি কর্তৃপক্ষ। এরপরই বুধবার সকাল থেকে মিলের জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দেন তাঁরা।

এ দিন সকাল থেকেই মিলের পাহারাদার, সাফাইকর্মীরা কাজ বন্ধ রেখে গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। আন্দোলনরত বিদ্যুৎ বিভাগের শ্রমিক প্রীতম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২৪ বছর ধরে এই মিলে কাজ করছি। মিল বন্ধ হওয়ার পর থেকে জরুরি পরিষেবা জারি রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করলাম। কিন্তু বেতন পাচ্ছি না। এ ভাবে কত টানা যায়।’’ মিল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি।

মিল বন্ধের পর গোন্দলপাড়া শ্রমিক মহল্লায় একের পর এক শ্রমিক আত্মঘাতী হন। বিনা চিকিৎসায় অনেকেই মারা যান। এই মৃত্যু মিছিল বন্ধের জন্য মিল চালুর দাবিতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলন হয়। কিন্তু মিলের দরজা শ্রমিকদের সামনে এ পর্যন্ত খোলেনি।

এ দিকে গত রবিবার মুম্বইয়ের অভিনেতা কুলভূষণ খারবান্দা অভিনীত ‘আত্মকথা’ নাটকের টিকিট বিক্রির টাকা থেকে বন্ধ গোন্দলপাড়া জুটের শ্রমিকদের চাল বিলি করা হল। গত শনিবার চন্দননগরের রবীন্দ্রভবনে ওই নাটক অভিনীত হয় চন্দননগরের নাগরিক সমাজের আহ্বানে। এরপর মিলের বেশ কিছু পরিবারকে তিন হাজার কেজি চাল বিলি করা হয়।

উদ্যোগের অন্যতম কাণ্ডারী পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের মোট ১১ হাজার কেজি চাল বিলি করেছি। নাটকের টিকিট বিক্রির টাকা থেকেই আমরা বন্ধ ডানলপ এবং ইন্ডিয়া জুটের শ্রমিকদেরও চাল দিয়েছি। আর যে টাকা অবশিষ্ট রয়েছে, তা দিয়ে আমরা গোন্দলপাড়া মিলের বাচ্চাদের শিক্ষা সামগ্রী দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gondalpara Jute Mill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE