Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিবাদ করলে শুনতে হচ্ছে হুমকি, অভিযোগ

মদ-জুয়ার রমরমা কেন, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন খলিসানি পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে গৌতম ধাড়া (৪৫) নামে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজাপুর থানার এক জন এএসআই তিন জন কনস্টেবল এবং এক জন ভিলেজ পুলিশকে ‌নিয়ে সেখানে যান।

প্রতিবাদ: পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদ: পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৯
Share: Save:

এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করতে গ্রামে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে গিয়ে মদ-জুয়ার রমরমা বন্ধ করতে ব্যর্থতার অভিযোগে তারা গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ল। মদ-জুয়ার ঠেক বন্ধ করতে লাগাতার অভিযান এবং ধরপাকড় চা‌লানো হবে, এই আশ্বাস দিয়ে পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি সামাল দেন। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানার অন্তর্গত জগন্নাথপুর গ্রামে।

পুলিশের দাবি, ওই এলাকায় মদ-জুয়ার ঠেক নিয়ে গ্রামবাসীদের তরফে এর আগে অভিযোগ মেলেনি। এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘বেআইনি মদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযা‌ন চলে। জগন্নাথপুরে গ্রামবাসীরা এ দিন কিছু অভিযোগ করেছেন। ওই এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন খলিসানি পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে গৌতম ধাড়া (৪৫) নামে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজাপুর থানার এক জন এএসআই তিন জন কনস্টেবল এবং এক জন ভিলেজ পুলিশকে ‌নিয়ে সেখানে যান। তাঁরা যখন দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন, তখন একদল গ্রামবাসী তাঁদের ঘিরে ধরেন। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় মদ-জুয়ার ঠেক রমরমিয়ে চলছে। উটকো লোকের আনাগোনা লেগেই থাকে। এলাকা কার্যত দুষ্কৃতীদের আখরা হয়ে গিয়েছে।

মহিলাদের বলতে শোনা যায়, সন্ধ্যার পরে নেশাগ্রস্ত লোকজনের ভয়ে মেয়েরা বেরোতে পারেন না। অথচ, পুলিশের ভ্রুক্ষেপ নেই। থানায় অভিযোগ জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। উল্টে গ্রামবাসীদের হেনস্থা করা হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, গ্রামে পুরুষদের একাংশ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে অশান্তি করেন। স্ত্রীকে মারধর করেন। পরিস্থিতির জেরে ছোটদের পড়াশোনা লাটে ওঠে। অবিলম্বে গ্রাম থেকে মদ এবং জুয়া-সাট্টার ঠেক তোলার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

রীনা রঞ্জিত নামে এক গৃহবধূর অভিযোগ, ‘‘মাস চারেক আগে বাড়ির সামনে কয়েকটা লোক মদ্যপ অবস্থা গালিগালাজ করছিল। তখন সেখান দিয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যাচ্ছিল। প্রতিবাদ করায় লোকগুলো আমায় মারধর করে। মেরে আমার স্বামীর মাথা ফাটিয়ে দেয়। থানায় গেলেও পুলিশ অভিযোগ নেয়নি।’’ আজিজুল রহমান নামে আর এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করলে নেশাগ্রস্তেরাই আমাদের হুমকি দেয়। ভয়ে কিছু বলতে পারি না।’’

রাজাপুর থানার আধিকারিকরা অভিযোগ মানেননি। তাঁদের দাবি, জগ‌ন্নাথপুর থেকে আগে অভিযোগ পুলিশের কাছে আসেনি। থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওখানে নিয়মিত নজরদারি চা‌লানো হবে। কেউ নির্দিষ্ট অভিযোগ করলে তদন্ত করা হবে।’’

পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গৌতমের দেহ উদ্ধারের সঙ্গে বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক নেই। পারিবারিক অশান্তির জেরে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশের ধারণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Betting Alcohol Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE