প্রতিবাদ: রেল অবরোধে সামিল স্থানীয়রা। নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবার রাতের ট্রেনে কলেজ থেকে গোঘাটে বাড়ি ফিরছিলেন অতশ্রী নন্দী (২৪) নামে এক তরুণী। শেষ পর্যন্ত তাঁর ফেরা হয়নি। বুধবার বিকেলে তাঁর মৃতদেহ মিলেছিল বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে, রেললাইনের ধারে।
গোঘাটের পশ্চিমপাড়ার ঝরিয়া গ্রামের ওই তরুণীর রহস্য-মৃত্যু ঘিরে বৃহস্পতিবার সকালে তেতে উঠল গোঘাটের খানাটি স্টেশন। রাতের ট্রেনে নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে ঘণ্টাদুয়েক অবরোধ করেন গ্রামবাসী। ট্রেন লক্ষ করে ইট ছোড়া হয়। তাতে যাত্রীদের বা ট্রেনের ক্ষতি হয়নি।
মৃতের পরিবার এবং গ্রামবাসীদের সন্দেহ, রাতের ট্রেনে অতশ্রীর সঙ্গে কেউ অশালীন আচরণ করে তাঁকে খুন করে দেহটি ফেলে দেয় কিংবা প্রাণ বাঁচাতে তিনি নিজেই চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে মারা যান। আরপিএফের এক সাব-ইনস্পেক্টর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে লিখিত ভাবে রাতের ট্রেনের মহিলা-কামরায় উপযুক্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। তবে, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের দাবি করেছেন, ‘‘রেল সংক্রান্ত কারণে অবরোধ হয়নি।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে গোঘাটের বেলি এলাকায় রেললাইনের ধারে একটি ঝোপে অতশ্রীর দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসী। পাশে পড়েছিল তাঁর ব্যাগ। তবে, মোবাইলটি মেলেনি। অতশ্রী চন্দননগরের একটি বেসরকারি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কলেজের ছাত্রী ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে কিছু বান্ধবীর সঙ্গে সেখানে ‘প্রজেক্ট’ জমা দিতে যান। রাতের ট্রেনে ফিরছিলেন। ট্রেনটি গোঘাটের খানাটি স্টেশনে পৌঁছনোর কথা ছিল রাত ৯টা ১৮মিনিটে। খোঁজ করেও রাতভর সন্ধান না-মেলায় বুধবার সকালে তাঁর পরিবারের লোকজন গোঘাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
অতশ্রীর বাবা কাঞ্চনবাবু জানান, মঙ্গলবার রাতে আরামবাগে পৌঁছনোর পরে মেয়ে তাঁকে ফোন করেছিল। মেয়ের বন্ধুরা আরামবাগ স্টেশনে নেমে গিয়েছিল। অত রাতে বাড়ি না-ফেরার জন্য তিনি মেয়েকে গোঘাটে মাসির বাড়ি চলে যেতে পরামর্শ দেন। কিন্তু মেয়ে সেখানে যায়নি। বাড়িও ফেরেনি।
অতশ্রীর মা ভারতীদেবী বলেন, ‘‘কেউ মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল কি না, বুঝতে পারছি না। হয়তো ও নিজেই লাফিয়ে পড়েছিল।’’ গ্রামবাসীর অভিযোগ, রাতের ট্রেনে রক্ষী থাকে না। কদাচিৎ আরপিএফের দেখা মেলে। অনেক সময় তারাও মদ্যপ অবস্থায় থাকে।
এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে লোক জমতে থাকে খানাটি স্টেশনে। ১০টা ১০ মিনিটের হাওড়াগামী ট্রেনের সামনে তাঁরা বসে পড়ে অবরোধ শুরু করেন। ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূল নেতা ফরিদ খান এবং প্রদীপ রায়। নিরাপত্তার আশ্বাস মেলার পরেও অবরোধকারীরা সরছিলেন না। তৃণমূল নেতাদের অনুগামীরা অবরোধকারীদের মারধর করে বলে অভিযোগ। অভিযোগ মানেননি ফরিদ। তাঁর দাবি, কাউকে মারধর করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy