Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভিলেন বৃষ্টি, পুজোর মুখে চিন্তায় ফুলচাষিরা

টানা কয়েক দিন বৃষ্টির পরে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কখনও কখনও মুখ ভার থাকছে আকাশের। মাঝে মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনও ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। সব মিলিয়ে ধান-সব্জি চাষিদের মতো সমস্যায় মুখে বাগনানের বিস্তীর্ণ এলাকার ফুলচাষিরা।

নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফুলগাছ। বাগনানে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফুলগাছ। বাগনানে তোলা নিজস্ব চিত্র।

মনিরুল ইসলাম
বাগনান শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৬
Share: Save:

টানা কয়েক দিন বৃষ্টির পরে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কখনও কখনও মুখ ভার থাকছে আকাশের। মাঝে মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনও ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। সব মিলিয়ে ধান-সব্জি চাষিদের মতো সমস্যায় মুখে বাগনানের বিস্তীর্ণ এলাকার ফুলচাষিরা। হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। তার পরেই বিশ্বকর্মা পুজো। এই বৃষ্টির প্রভাব ফুল চাষেও পড়ায় দাম যে চড়বে তা আশঙ্কা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই।

হাওড়ার বাগনান ১ ও ২ ব্লকের শরৎ, ওরফুলি পঞ্চায়েতের শরৎ, বাঁকুড়দহ, কাঁটাপুকুর, ভুলগেড়িয়া, খানজাদাপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল চাষ হয়। বুলগেড়িয়ার ফুলচাষি দুধকুমার ভৌমিক প্রায় কাঠা দশেক জমিতে দোপাটি চাষ করেছেন। তিনি বললেন, ‘‘প্রায় সব গাছই মরে যেতে বসেছে। ফলে নতুন করে ফের গাছ লাগাতে হবে।’’ খানজাদাপুরের চাষি দীনেশ সামন্তরও একই দাবি। বাঁকুড়দহের চাষি পুলক ধাড়া প্রায় দু’বিঘা জমিতে দোপাটি, জবা, অপরাজিতা. গোলাপ চাষ করেছেন। তিনিও বলেন, ‘‘বেশিরভাগ গাছই মরে যেতে বসেছে। সামান্য কিছু গাছ বেঁচে রয়েছে। দেখা যাক সেখান থেকে কতটা লোকসান কমানো যায়।’’

এলাকা ঘুরে দেখা গেল, টানা বৃষ্টির ফলে গাছের গোড়ায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। মাটি ভিজে থাকায় গাছের গোড়ায় পচনও ধরতে শুরু করেছে। তার উপর রোদ পেলেই সেই গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। যদি তিন চার দিন টানা রোদ হয় তা হলে আর কথাই নেই। আরও দ্রুত গাছ শুকিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এই অবস্থা দোপাটি, গাঁদা, অপরাজিতা, চন্দ্রমল্লিকা-সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছের। চাষিদের দাবি, এই সব ফুল গাছের গোড়া নরম হয়। ফলে এই সব গাছের গোড়া কয়েক দিন ভিজে থাকলেই পচন ধরে যায়। গোলাপ, জাড়বেড়া-সহ কয়েকটি প্রজাতির গাছের গোড়া একটু শক্ত বলে এই সব গাছের গোড়া ভিজে থাকলেও পচন ধরতে একটু সময় লাগে। তবে যেসব জায়গা নীচু সেখানে সপ্তাহ খানেক জল দাঁড়িয়ে যায়। ফলে সেই সব জায়গায় গোলাপ, জবা-সহ কয়েকটি প্রজাতির ফুল গাছের গোড়ায় সামান্য পচন ধরেছে।

চাষিদের দাবি, জোরে বৃষ্টি হলে এই সমস্যা হত না। তখন গাছের গোড়ার ভিজে মাটি ধুয়ে যেত। ফলে গাছের বেশি ক্ষতি হত না।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দোপাটি, গাঁদা, অপরাজিতা মাস দু’য়েক আগে লাগানো হয়েছিল। নতুন গাছ লাগিয়ে তাতে ফুল ধরতে প্রায় দু’মাস লেগে যাবে। তা ছাড়া শীতের সময় যে গোলাপ উঠত সেই গাছের চারা তৈরির প্রক্রিয়া এখন চলছে। বৃষ্টির ফলে সেই প্রক্রিয়াও ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় সামনে বিশ্বকর্মা পুজো। সেখানে প্রচুর ফুল লাগে। পুজোতে ফুলের দাম রীতি মতো বাড়বে বলে দাবি ফুলচাষিদের। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘এই ধরনের আবহাওয়ার কারণে ফুলচাষিরা সমস্যায় পড়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

puja flower market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE