Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
goghat

সুকান্ত উদ্যান বেহাল, বসছে নেশার আসর

শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুরকে ঘিরে জনবসতি বাড়ছিল ক্রমশ। সুস্থ পরিবেশ গড়াই ছিল লক্ষ্য।এ জন্য ফুলের বাগান-সহ নানা গাছ-গাছালি, শিশুদের খেলার জায়গা, যুবকদের শরীরচর্চা এবং খেলাধুলোর জায়গা, প্রবীণদের আড্ডার বেঞ্চ, পানীয় জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি করা হয় পার্কে। 

এত্তা জঞ্জাল: পার্কের একাংশের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র।

এত্তা জঞ্জাল: পার্কের একাংশের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র।

পীযূষ নন্দী
গোঘাট শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৯
Share: Save:

জেলা পরিষদের পরিদর্শন, উন্নয়নের রূপরেখা তৈরিই সার। কামারপুকুরকে সাজানোর কাজ এখনও কার্যত তিমিরে। হাল ফেরেনি এখানকার সুকান্ত উদ্যানেরও। লোহার জালে ঘেরা পার্কের আগল উধাও। কামারপুকুর পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই পার্ক এখন সমাজবিরোধীদের আড্ডা এবং সন্ধ্যা হলেই মদ-গাঁজার আসর বসে বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ।

জেলা পরিষদের সহায়তায় কামারপুকুর থেকে বেঙ্গাই যাওয়ার রাস্তার গায়ে পতিত সরকারি জায়গার বিঘাদুয়েক জমিতে ২০০৭ সাল নাগাদ পার্কটি নির্মাণ করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট পরিচালিত পঞ্চায়েত বোর্ড। শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুরকে ঘিরে জনবসতি বাড়ছিল ক্রমশ। সুস্থ পরিবেশ গড়াই ছিল লক্ষ্য।এ জন্য ফুলের বাগান-সহ নানা গাছ-গাছালি, শিশুদের খেলার জায়গা, যুবকদের শরীরচর্চা এবং খেলাধুলোর জায়গা, প্রবীণদের আড্ডার বেঞ্চ, পানীয় জলের ব্যবস্থা ইত্যাদি করা হয় পার্কে।

এখন পানীয় জলের সংযোগ নেই। কংক্রিটের বেঞ্চ উধাও। ফুলের বাগান নেই। গাছও অধিকাংশই চুরি হয়ে গিয়েছে। খালি পার্কের ফটকটা অক্ষত আছে। আর আছে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বসানো মা সারদার মূর্তি। কিন্তু সেটিও দীর্ঘদিন পরিষ্কার হয়নি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, পার্কটিকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলার। সিপিএমের পক্ষে সম্প্রতি তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান তপন মণ্ডলের কাছে এ নিয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।

কিন্তু কিছু হয়নি। কামারপুকুরের সিপিএম নেতা তিলক ঘোষের অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল কামারপুকুর সাজিয়ে তোলার। কিন্তু তা আজও হয়নি। আমাদের সময় তৈরি পার্কটি স্রেফ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে রয়েছে। তৃণমূলের আগের পঞ্চায়েত বোর্ড যদিবা ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মাঝেমধ্যে সাফাই করেছে কিন্তু বর্তমান বোর্ড তা করছে না।”

একই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জনা রায়, বিমল চক্রবর্তী এবং আরও অনেকের। পার্ক সংস্কার না হলে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। ব্যবসায়ী সুকান্ত ঘোষের দাবি, “অবিলম্বে পার্কটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদকে।”

পঞ্চায়েত প্রধান তপন মণ্ডলের দাবি, “তহবিলের অভাবেই পার্ক রক্ষণাবেক্ষণে কিছু করা যাচ্ছে না। জেলা পরিষদের কাছে অর্থ বরাদ্দের আবেদন করা হচ্ছে।” জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান বলেন, “প্রস্তাব এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

২০১৮ সালের ২০ মার্চ গুড়াপে হুগলি জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কামারপুকুরকে সাজানোর কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কামারপুকুরের উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হয় তার কিছুদিন পর থেকেই। তৎকালীন জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এলাকা ঘুরে বেশ কিছু উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করার নির্দেশ দেন। যেমন, রামকৃষ্ণ মিশনের জমিতে তাঁদের ভক্তদের জন্য একটি ‘পার্কিং জ়োন’ তৈরি, ডাকবাংলো সংলগ্ন মাঠে আধুনিক বাস টার্মিনাস, শ্রীপুর মাঠের উন্নয়ন, ভূতির খাল সংস্কার, কামারপুকুর চটি এলাকায় সুকান্ত উদ্যানকে সুসজ্জিত করে পার্ক এবং তার পাশেই অডিটোরিয়াম তৈরি ইত্যাদি। কিন্তু শুধু ভূতির খালই কিছুটা সংস্কার হয়েছে। অন্য কাজ এগোয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Goghat Kamarpukur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE