Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেতু সারাই শুরু, যানজটে নাকাল হাওড়া

নিবড়ার দিক থেকে সেতুর চার নম্বর এক্সপ্যানশন জয়েন্ট ভেঙে যাওয়ায় তা মেরামতির জন্য চার দিন সেতুটি আংশিক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য পূর্ত দফতর।

মেরামতি: চলছে রাস্তা সারাই। —নিজস্ব চিত্র

মেরামতি: চলছে রাস্তা সারাই। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০৯
Share: Save:

যা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা-ই সত্যি হল!

মেরামতির জন্য মাত্র ৪৮ ঘণ্টার নোটিসে সাঁতরাগাছি সেতু আংশিক বন্ধ করে দেওয়ার ফল প্রথম দিনেই হাড়ে হাড়ে টের পেলেন যাত্রীরা। শুক্রবার সকাল আটটা থেকে সেতুর এক দিক বন্ধ রেখে কাজ শুরু হওয়ার পরেই সাত কিলোমিটার দীর্ঘ কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন থমকে যায়। দিনভর সেই যানজটে নাজেহাল হন যাত্রীরা। যানজটের জের ছড়িয়ে পড়ে এক দিকে হাওড়া-আমতা রোডে, অন্য দিকে আন্দুল রোডে। শুধুমাত্র দুপুরের দিকে যানবাহন কমে যাওয়ায় যানজট কিছুটা কমলেও ফের বিকেল থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা রাস্তা ও সংলগ্ন এলাকা।

নিবড়ার দিক থেকে সেতুর চার নম্বর এক্সপ্যানশন জয়েন্ট ভেঙে যাওয়ায় তা মেরামতির জন্য চার দিন সেতুটি আংশিক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য পূর্ত দফতর। এর জন্য ৮ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেতুর উপর দিয়ে মালবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল আটটা থেকে ইঞ্জিনিয়ারেরা কাজ শুরু করেন। রাস্তার একাংশ বন্ধ থাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজা থেকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন নিবড়া পর্যন্ত। চলে প্রায় মধ্যরাত অবধি। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নামেন সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক কর্তারা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। যানবাহনের চাপ সামাল দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।

গত ৬ তারিখ হাওড়া সিটি পুলিশ নোটিস দিয়ে জানায় সেতুর মেরামতির কথা। মাত্র দু’দিনের নোটিসে কাজ শুরু হওয়ায় সমস্যায় পড়ে পুলিশও। এ দিন প্রচুর গাড়ি কলকাতা ও জাতীয় সড়কের দিক থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে ঢুকে পড়ে। যার জেরে নাজেহাল হন অফিসযাত্রীরা। তপশ্রী রায় নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘সেতু যে বন্ধ থাকবে, জানতাম না। জানলে অন্য রুট দিয়ে অফিস যেতাম।’’

কিন্তু অন্য রুটেই বা যাবেন কী করে? আন্দুল রোডের একাংশে পদ্মপুকুর পাইপলাইনের কাজ চলার পরে রাস্তা সারাই না হওয়ায় এমনিতেই নিত্যদিন যানজট হচ্ছিল। এ দিন কিছু গাড়ি আন্দুল রোড দিয়ে পাঠানোয় সকাল ১০টার পরে পুরো রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা দেবকুমার দেও বলেন, ‘‘হাঁসখালি পোল থেকে ব্যাতাইতলা আসতেই দু’ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে।’’ কিন্তু যে কারণে এই ভোগান্তি, সেই সাঁতরাগাছি সেতু কাজের দিনে সারানো শুরু হল কেন?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘একটা এক্সপ্যানশন জয়েন্ট মেরামতির জন্য কম করে চার দিন লাগে। শনি, রবি ও সোমবার সরকারি ছুটি থাকায় এই সময়টিকে বাছা হয়েছে। ১২ তারিখ মাধ্যমিক শুরু। তাই সোমবার রাতের মধ্যে কাজ শেষ করতেই হবে।’’

পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, সেতুটি নির্মাণের সময়ে বৃষ্টির জল বার করার জন্য ছিদ্র থাকলেও তার সঙ্গে পাইপ লাগানো ছিল না। তাই জল পড়ে স্তম্ভগুলির ক্ষতি হয়েছে। এ বার তাই ফানেল লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেগুলির সঙ্গে পাইপের সংযোগ করা হচ্ছে। প্রথমে কংক্রিট ভেঙে বার করা হবে এক্সপ্যানশন জয়েন্ট। তার পরে নতুন করে তা লাগিয়ে দেওয়া হবে। মেরামতির কাজে আসা ইঞ্জিনিয়ারদের অভিমত, অন্য অনেক সেতুর তুলনায় সাঁতরাগাছি সেতুর অবস্থা ভাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Santragachhi Bridge Repair Traffic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE