Advertisement
E-Paper

পুলিশ পরিচয় দিয়ে লুঠ শিয়াখালায়

মাঝরাতে দরজায় ধাক্কা। ঘুম ভেঙে যায় বা়ড়ির লোকের। আলো জ্বালতেই বাইরে থেকে নির্দেশ, ‘থানা থেকে আসছি, দরজা খুলুন’। সেই শুনে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ভিতরে ৮-১০ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অবাধে লুঠপাট চালায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৮

মাঝরাতে দরজায় ধাক্কা। ঘুম ভেঙে যায় বা়ড়ির লোকের। আলো জ্বালতেই বাইরে থেকে নির্দেশ, ‘থানা থেকে আসছি, দরজা খুলুন’।

সেই শুনে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ভিতরে ৮-১০ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অবাধে লুঠপাট চালায়। সেখান থেকে বেরিয়ে পাশের একটি বাড়ির দরজা ভাঙারও চেষ্টা করে। ততক্ষণে অবশ্য গ্রামবাসীরা বেরিয়ে পড়ায় দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে হুগলির শিয়াখালা পঞ্চায়েতের পাতুল গ্রামে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীরা রাত পাহারার ব্যবস্থা করলে পুলিশ সাহায্য করবে। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, ওই বাড়িতে পাঁচ লক্ষ টাকা রয়েছে— সম্ভবত এই ভুল খবরের ভিত্তিতে সেখানে দুষ্কৃতীরা হানা দেয়। এলাকায় রাত-পাহারা দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে যে বাড়িতে লুঠপাট হয়, সেখানে স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে থাকেন বৃদ্ধ অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অসুস্থ। ছেলে সৌরভ সোনারুপোর দোকানে কাজ করেন। তাঁর আয়েই সংসার চলে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ তাঁরা খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে পড়েন। রাত দু’টো নাগাদ দুষ্কৃতীরা একটি ছোট ট্রাকে চেপে ওই গ্রামে হানা দেয়। অশোকবাবুর বাড়িতে কড়া নাড়ে। পুলিশ এসেছে শুনে অশোকবাবুর স্ত্রী শিপ্রাদেবী দরজা খুলতেই ঘরে ঢুকে স্বমূর্তি ধরে ওই যুবকেরা। ওই পরিবারের লোকেরা জানান, দুষ্কৃতীদের মুখ রুমালে বাঁধা ছিল। হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, ভোজালি, শাবল। এক দুষ্কৃতী সৌরভের মাথায় পিস্তল ঠেকায়। এর পরেই নির্দেশের সুরে বলে, ‘তোদের বা়ড়িতে পাঁচ লক্ষ টাকা রয়েছে। বের করে দে’।

শিপ্রাদেবীরা জানান, তাঁদের কাছে অত টাকা নেই। এর পরেই দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র তছনছ করে টাকা খুঁজে দেখে। কিন্তু অত টাকা মেলেনি। শেষ পর্যন্ত নগদ কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। তাঁর গলা থেকে সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার আগে হুমকিও দেয়।

অশোকবাবুদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় দুষ্কৃতীরা ছোট ট্রাকে চেপে ২৬ নম্বর রুট ধরে শিয়াখালা-চৌমাথার দিকে চলে যায়। গ্রামবাসীরা পুলিশে কবর দেন। রাতেই চণ্ডীতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পরে তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের অনুমান, দুষ্কৃতীদের সকলেরই বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।

শুক্রবার সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘর লন্ডভন্ড। এ দিকে ও দিকে গ্রামবাসীদের জটলা। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, পুলিশি টহলের অভাব রয়েছে। সেই কারণেই দুষ্কৃতীরা এ ভাবে গ্রামে হানা দিল। সৌরভবাবু বলেন, ‘‘এর আগেও আমাদের গ্রামে রাতে চুরি হয়েছে। কিন্তু পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুষ্কৃতীরা হানা দিচ্ছে এমনটা শুনিনি। পুলিশ অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’ তাঁর সংযোজন, গ্রামে রাত পাহারার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি আমরা।’’

Robbery Chanditala police hooghly south bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy