Advertisement
E-Paper

শাশুড়ি ও বৌমাকে ভয় দেখিয়ে লুট

মঙ্গলবার বাগনানের নুন্টিয়া গ্রামে এই ডাকাতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ দুষ্কৃতীদের নাগাল পায়নি। পুলিশের অনুমান, ওই পরিবারের পরিচিত কেউ এই ঘটনায় যুক্ত। কিছু সূত্রও মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৩
লন্ডভন্ড: ডাকাতির পর ঘরের অবস্থা। নিজস্ব চিত্র

লন্ডভন্ড: ডাকাতির পর ঘরের অবস্থা। নিজস্ব চিত্র

গভীর রাতে চিলেকোঠার দরজা দিয়ে ঢুকে ঘুমন্ত এক বৃদ্ধা এবং তাঁর পুত্রবধূকে ভয় দেখিয়ে গয়না ও নগদ টাকা লুট করে পালাল দুষ্কৃতীরা। বৃদ্ধার ঘরের বন্ধ দরজার খিল দুষ্কৃতীরা কোনও ভাবে খুলে ফেলে। তাঁর পুত্রবধূর ঘরের দরজা ভাঙে।

মঙ্গলবার বাগনানের নুন্টিয়া গ্রামে এই ডাকাতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ দুষ্কৃতীদের নাগাল পায়নি। পুলিশের অনুমান, ওই পরিবারের পরিচিত কেউ এই ঘটনায় যুক্ত। কিছু সূত্রও মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।’’

পাঁচিলঘেরা দোতলা ওই বাড়িটির মালিক মানস সাঁতরা এয়ার ইন্ডিয়াতে চাকরি করেন‌। কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। তাঁর স্ত্রী অনামিকা চার বছরের মেয়েকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতেই থাকতেন। মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য অক্টোবরে শাশুড়ি সুমতিদেবীর কাছে চলে আসেন। বাড়িটির নীচের তলায় তিনটি ঘরের একটিতে থাকেন সুমতিদেবী। পাশের দু’টি ঘর বন্ধ থাকে। উপরের তিনটি ঘরের মধ্যে দু’টি অসম্পূর্ণ। অন্য একটি ঘরে মেয়েকে নিয়ে থাকেন অনামিকা।

পুলিশ এবং ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চার দুষ্কৃতী পাঁচিল টপকে ঢোকে। তাদের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। কোনও ভাবে চিলেকোঠায় উঠে খোলা দরজা দিয়ে দুষ্কৃতীরা ঢুকে প্রথমে নীচে নামে। একটি বন্ধ ঘরের তালা খুলে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে থাকা গয়না এবং নগদ টাকা হাতায়। এরপরে তারা সুমতিদেবীর ঘরের খিল খুলে ঢুকে ছুরি দেখিয়ে তাঁর মুখ চেপে ধরে কান থেকে দুল ছিনিয়ে নেয়। আলমারি থেকে তাঁর সব গয়নাও নেয়। নিয়ে নেয়। দুই দুষ্কৃতীকে সুমতিদেবীর পাহারায় রেখে অন্য দু’জন উঠে যায় দোতলায়। অনামিকার ঘরের দরজা তারা ভেঙে ফেলে। তাঁকেও ভয় দেখিয়ে গা থেকে গয়না খুলে নেয়। এমনকি, তাঁর দামি মোবাইলটিও দুষ্কৃতীরা নিয়ে নেয়। তারপরে চার জ‌নেই পাঁচিলের দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।

অনামিকা বলেন, ‘‘ডাকাতরা আমাকে বলছিল, কাউকে মারধর করতে ওরা আসেনি। গয়না, টাকা দিলেই ওরা চলে যাব। লুটপাট করে চলে যাওয়ার সময়ে ওরা আমার মোবাইলও নিয়ে চলে যায়।’’

দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে এসেছিল না হেঁটে, তা বলতে পারেননি কেউ। তবে, অনুমিকা এবং সুমতিদেবী জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। ছুরি ছিল। আধ ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরেও সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে ফোন করতে পারেননি সুমতিদেবীরা। কারণ, দুষ্কৃতীরা অনামিকার ফোন নিয়ে নেয়। আর সুমতিদেবীর ফোন ‘রিচার্জ’ করা ছিল না। তা ছাড়া, ঘটনার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনামিকা তাঁকে সুস্থ করেন। তারপরে দু’জনেই সারা রাত ঘরে সিঁটিয়ে ছিলেন। বুধবার সকাল হতে তাঁরা পড়শিদের খবর দেন। খবর যায় পুলিশেও। গ্রামীণ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা তদন্তে ঘটনাস্থলে আসেন। সুমতিদেবীর ঘরের সামনে থেকে তদন্তকারীরা একটি স্ক্রু-ড্রাইভার উদ্ধার করেছেন। তাঁদের অনুমান, ওই যন্ত্রটি দিয়েই দুষ্কৃতীরা বৃদ্ধার ঘরের দরজার খিল খোলে।

বাড়িতে ডাকাতির কথা শুনে এ দিন বেঙ্গালুরু থেকে মানসবাবু ফোনে বলেন, ‘‘জরুরি কাজ থাকায় আমি ফিরতে পারিনি। স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে মনে হয়েছে দুষ্কৃতীরা যে ভাবে লুটপাট চালিয়েছে, তাতে আমাদের বাড়ির প্রতিটি কোণ তাদের পরিচিত। এটা কী করে হল বুঝতে পারছি না।’’

Roberry Bagnan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy