Advertisement
E-Paper

স্কুল-বাগানের আনাজ স্বাদ জোগাচ্ছে পড়ুয়াদের

গোঘাটের বেঙ্গাই হাইস্কুলের ছবিটা কিন্তু একেবারে অন্য রকম। প্রায় প্রতিদিনই যে তরকারি তাদের দেওয়া হয়, তার স্বাদ যথেষ্ট লোভনীয়— বলছে পড়ুয়ারা। আর অভিভাবকেরা নিশ্চিন্ত খাদ্যের গুণগত মান নিয়ে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০২:১৭
সম্পদ: এই জমির আনাজই রান্না হচ্ছে মিড ডে মিলে। নিজস্ব চিত্র

সম্পদ: এই জমির আনাজই রান্না হচ্ছে মিড ডে মিলে। নিজস্ব চিত্র

মিড-ডে মিলের পাতে প্রায় রোজই পড়ে সয়াবিন। কোনও দিন ডিম সেদ্ধ। নিয়ম করে পাতলা মাছের ঝোল, আর মাসে একদিন মাংস। আর কখনও কোনও স্কুলে ইলিশ খাওয়ানো হলে তা হয়ে যায় ‘খবর’। ছবি-সহ ছাপা হয় সংবাদপত্রে। ছাত্র পিছু ৬টাকা ১৮ পয়সা বরাদ্দে ওইটুকু খাবার জোগাড় করতেই হিমসিম খান বেশির ভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষ।

গোঘাটের বেঙ্গাই হাইস্কুলের ছবিটা কিন্তু একেবারে অন্য রকম। প্রায় প্রতিদিনই যে তরকারি তাদের দেওয়া হয়, তার স্বাদ যথেষ্ট লোভনীয়— বলছে পড়ুয়ারা। আর অভিভাবকেরা নিশ্চিন্ত খাদ্যের গুণগত মান নিয়ে। স্কুলের জমিতেই যে চাষ হয় টোম্যাটো, পালং শাক, বিট, গাজর, বিন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, কুমড়ো, ঢেঁড়স, পেঁপে, বেগুন থেকে পেঁয়াজ, রসুন, ধনেপাতা। এমনকী মাছও। ‘‘মিড-ডে মিলের জন্য বাজার থেকে কিনতে হয় শুধু চাল, সয়াবিন, পোস্ত, ডিম, মাঝে মধ্যে বড় মাছ এবং মাসে একবার মাংস’’, বললেন টিচার ইন-চার্জ তপন মণ্ডল। তবে প্রশাসনিক কর্তা বলছেন, এই পদ্ধতি একেবারে নতুন কিছু নয়। স্কুলে জায়গা থাকলে ‘কিচেন গার্ডেন’ বা মিড-ডে মিলের জন্য চাষ করার কথা জানিয়েছিল সরকারই। বেঙ্গাই হাইস্কুল তা সফল ভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে।

তপনবাবু জানিয়েছেন, স্কুল সীমানার মধ্যে পতিত ৩০ শতক জায়গা জুড়ে হয়েছে আনাজ বাগান করেছেন তাঁরা। সেখানে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতি আনাজ চাষ হচ্ছে। পাশেই ছোট পুকুরে চলছে রুই ও কাতলা মাছের চাষ। নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলের বাগান পরিচর্যা করে ছাত্ররাই। শিক্ষকরাও হাত লাগান। সম্প্রতি গোঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতি ১৫ কেজি মাছের চারা দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। স্কুল শিক্ষকরা বলেন, ‘‘সরকার যা বরাদ্দ করে ছাত্রদের ভাল করে খাওয়ানো যায় না। ছেলেরা যাতে আরও তাজা, পুষ্টিকর এবং স্বাদু খাবার পায় সে জন্যই এই উদ্যোগ।”

শীতের প্রায় চারমাস বাজার থেকে কোনও আনাজই কিনতে হয় না বেঙ্গাই হাইস্কুলে। হিসাবে অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা বাঁচে। তাতে বছরের অন্য সময়ও ভাল খাবার দেওয়া যায় পড়ুয়াদের। স্কুল সূত্রে খবর, উচ্চতর বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাথা পিছু বরাদ্দ ৬ টাকা ১৮ পয়সা। ওই টাকার মধ্যেই কিনতে হয় আনাজ, ডাল, সয়াবিন, পোস্ত, ডিম, তেল-সহ অন্য সামগ্রী এবং গ্যাস সিলিন্ডার।

তপনবাবুর অভিযোগ, “শুধু বরাদ্দ কম তাই নয়, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী মিড-ডে মিলের মোট উপভোক্তার ৮৫ শতাংশ পড়ুয়ার জন্য পয়সা দেওয়া হয়। অথচ আমাদের স্কুলে প্রায় ৯৫ শতাংশই মিড ডে মিল খায়। ফলে সামাল দেওয়া মুশকিল।”

জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প অফিসার অরূপ দত্ত বলেন, “নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কারের অন্যতম শর্তই হল স্কুলের ‘কিচেন গার্ডেন’। বেঙ্গাই স্কুল তা করতে পেরেছে। বাড়তি মাছ চাষও করেছে। এতে জেলার অন্য স্কুলগুলিও এতে উৎসাহ পাবে।”

Midday Meal Vegetables
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy