মেলামেশায় বাধা দেওয়ায় ‘প্রেমিকা’র মামাকে খুনের অভিযোগে কোন্নগরের গোকুলতলার বাসিন্দা অনিল মিত্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল শ্রীরামপুর আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৮ সালের ১৭ অগস্ট রাতে কোন্নগরের অরবিন্দ রোডে একটি নর্দমা থেকে স্বপন রায়বর্মন নামে বছর পঞ্চান্নর এক প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের ভাই অজিত রায়বর্মণ অনিলের বিরুদ্ধে উত্তরপাড়া থানায় এফআইআর দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে ওই যুবকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার কয়েক দিন পরে অনিলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শ্রীরামপুর আদালতে ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার তারকেশ্বর মুখোপাধ্যায়। গ্রেফতার হওয়া ইস্তক জেলেই রয়েছে অনিল।
সম্প্রতি মামলার শুনানি শেষ হয়। শুক্রবার অনিলকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়। মামলার সরকারি কৌঁসুলি জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, শনিবার বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি তার পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেন।
জয়দীপবাবু জানান, স্বপনবাবুদের কাছেই তাঁদের ভাগ্নি থাকতেন। সেই সময় ওই তরুণী কলেজে পড়তেন। অনিলের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। স্বপনবাবু সেই সম্পর্কে বাধ সাধেন। তিনি ভাগ্নির বাইরে বেরনো কার্যত বন্ধ করে দেন। এতেই স্বপনবাবুর উপর খেপে যায় অনিল। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ স্বপনবাবু কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় নির্জন রাস্তায় কংক্রিটের একটি চাঁই দিয়ে মাথায় মেরে স্বপনবাবুকে খুন করে অনিল। দেহ পাশের নর্দমায় ফেলে দেয়। দেহ উদ্ধারের সময়েই রক্তমাখা কংক্রিটের চাঁইটি পুলিশ উদ্ধার করে।
ঘটনার পরেই পুলিশকে অনিলের দাদা অশোক এবং রাজু দাস নামে এক বন্ধু জানান, ওই রাতে অনিল এসে তাঁদের বলেছিল যে, সে স্বপনবাবুকে মেরে ফেলেছে। তা শুনে ওই দু’জন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, কথাটা সত্যি। অজিতবাবু পুলিশকে জানান, খুন হওয়ার কয়েক দিন আগে স্বপনবাবু তাঁকে বলেছিলেন, অনিল তাঁকে শাসাচ্ছে। জয়দীপবাবু বলেন, ‘‘অশোক এবং রাজুর স্বীকারোক্তি অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। ওঁরা আদালতে অপরাধীকে সনাক্তও করেন।’’