হাসপাতালে বৃদ্ধা।—নিজস্ব চিত্র।
দু’দিন আগে শীতের রাতে এক অশীতিপর বৃদ্ধাকে ত্রিবেণীর শিবপুর বাসস্ট্যান্ডে বসে থরথরিয়ে কাঁপতে দেখেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়। গৌতমবাবু, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশের তৎপরতায় বুধবার সেই বৃদ্ধার ঠাঁই হল মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে।
বৃদ্ধা নিজের নাম জানিয়েছেন লক্ষ্মী সাঁতরা। ঠিকানা হিসেবে শুধু তেঁতুলতলা বলছেন। গৌতমবাবু এবং পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগ, মেজো ছেলে দিলীপ সাঁতরা তাঁর বার্ধক্যের কারণে সংসারে ঠাঁই না দিয়ে মঙ্গলবার রাতে ভ্যানে করে ওই বাসস্ট্যান্ডে ছেড়ে যায়। কিন্তু বুধবার দিনভর তল্লাশি চালিয়েও বাঁশবেড়িয়ার তেঁতুলতলা এলাকায় দিলীপ সাঁতরার কোনও হদিস পায়নি পুলিশ।
পুলিশের এক কর্তা জানান, বৃদ্ধার কথাবার্তায় অসঙ্গতি রয়েছে। আপাতত তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। পরিবারের খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যবসার কাজ সেরে মঙ্গলবার ফেরার পথে বাসস্ট্যান্ডে ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলার পরে গৌতমবাবু একটি টোটোতে তুলে তাঁকে বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু বাড়ি খুঁজে না পাওয়ায় টোটো-চালক বৃদ্ধাকে ওই বাসস্ট্যান্ডেই ফিরিয়ে আনেন। গৌতমবাবু এলাকার বাসিন্দাদের সব জানিয়ে বৃদ্ধাকে ওই রাতে ঝাউতলা কালীবাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। তাঁর জন্য শীতবস্ত্র কিনে দেওয়া হয়। খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার গৌতমবাবুরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। মগরা থানার ওসি সুখময় চক্রবর্তী বৃদ্ধাকে মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এক দিনেই বৃদ্ধা হাসপাতাল কর্মীদের ‘ঠাকুমা’ হয়ে গিয়েছেন। কেউ তাঁকে ফল এনে দিচ্ছেন, কেউ অন্য খাবার। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। হাঁটাচলাও ভাল করতে পারেন না। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সত্যি-মিথ্যে জানি না। বৃদ্ধার কথা শুনে খারাপ লেগেছিল। শীতের রাতে রাস্তায় থাকলে হয়তো উনি মারা যেতেন। সেই জন্য ওঁকে কালীবাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করি। পরে হাসপাতালে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy