প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর আগে প্রৌঢ়া মাকে কুপিয়ে খুনের দায়ে ছেলেকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। বুধবার শ্রীরামপুর আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় কোন্নগরের ছোট বহেরার বাগানপাড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত দাসকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ, বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণার পালা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ১০ মার্চ। ওই সন্ধ্যায় মা রেণুকা দাসের সঙ্গে ঝগড়া হয় বছর ছত্রিশের জয়ন্তর। তখনই একটি টাঙ্গি নিয়ে মায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই যুবক। মাকে এলোপাথাড়ি কোপায়। রক্তে ঘর ভেসে যায়। ঘটনাস্থলেই রেণুকাদেবীর মৃত্যু হয়। ওই রাতেই নিহতের মেজ ছেলে জহর দাস উত্তরপাড়া থানায় জয়ন্তর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
অভিযুক্ত জয়ন্তকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ধৃতকে নিয়ে গিয়ে বাড়ি থেকেই খুনে ব্যবহৃত টাঙ্গি উদ্ধার করা হয়। জয়ন্তর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার সঞ্জয় চক্রবর্তী। পরে জয়ন্ত জামিন পেয়ে যায়।
মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, বাড়িতে তিন ছেলের সঙ্গে থাকতেন বিধবা রেণুকাদেবী। বড় ছেলে জয়ন্ত অবিবাহিত। তেমন কোনও কাজও করত না সে। টাকাপয়সা চেয়ে এবং সম্পত্তির দাবিতে মায়ের উপর অত্যাচার করত। অভিযোগকারী জহরবাবুর স্ত্রী সঙ্গীতাদেবী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। ওই সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতেই টিভি দেখছিলেন। শাশুড়ির আর্তনাদ শুনে পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন ওই ঘটনা। চোখের সামনে ওরকম দৃশ্য দেখে তিনি চিৎকার শুরু করেন।
মাকে মারার পরে জয়ন্ত পালানোর চেষ্টা করেনি। খুনের কথাও সে স্বীকার করে নেয়। ঘটনার এক দিন পরে সঙ্গীতাদেবী গোপন জবানবন্দি দেন। অভিযুক্ত জয়ন্ত দাবি করেছিল, সে মানসিকভাবে অসুস্থ। বিচারক চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে তাঁর পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসকের রিপোর্ট তলব করেন। দেখা যায়, জয়ন্তর মানসিক সমস্যা নেই। জয়দাপবাবু বলেন, ‘‘সঙ্গীতাদেবী-সহ মোট ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। সঙ্গীতাদেবীই ছিলেন প্রধান সাক্ষী।’’ বুধবার জয়ন্তকে হেফাজতে নেয় আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy