Advertisement
E-Paper

মধ্যরাতে শব্দ লাগাম ছাড়াই

কালীপুজোর মধ্যরাতেও হুগলির বহু জায়গাতেই শব্দবাজি জব্দ হল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বাজি ফাটালেন এক শ্রেণির মানুষ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৮

রাত ১০টার গণ্ডি পেরিয়ে ১১টা, ১২টা, সাড়ে ১২টা...!

কালীপুজোর মধ্যরাতেও হুগলির বহু জায়গাতেই শব্দবাজি জব্দ হল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বাজি ফাটালেন এক শ্রেণির মানুষ। প্রতিবাদে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন হুগলির পরিবেশপ্রেমীরা।

পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মঙ্গলবার অনেক রাত পর্যন্ত রাস্তায় ছিলাম। শব্দবিধি ভাঙার প্রমাণ হাতে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টকে জানাব। প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলকেও চিঠি দেব।’’

এ বার সুপ্রিম কোর্ট বাজি পোড়ানোয় দু’ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু তা কতটা মানা হবে, তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। মঙ্গলবার কালীপুজোর সন্ধ্যায় হুগলির শহরাঞ্চলে শব্দবাজির দাপট কিছুটা কম থাকলেও রাত বাড়তেই শুরু হয় তাণ্ডব। রাত ৮টা থেকে ১০টার সময়সীমাকেও এক শ্রেণির মানুষ গ্রাহ্যই করেননি।

রিষড়ার বাঙ্গুর পার্ক, শ্রীরামপুরের নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউ, মুখার্জিপাড়া, হিন্দমোটর, ভদ্রেশ্বরের সারদাপল্লি, চন্দননগরের বড়বাজারের মতো জায়গায় শব্দবাজি ফেটেছে। উত্তরপাড়ার কোতরং এলাকায় একটি আবাসনে রাত পর্যন্ত সব রকম বাজিই ফেটেছে বলে অভিযোগ। ধোঁয়ায় চারিদিক ঢেকে যাওয়ায় অনেকেই ঘরের জানলা বন্ধ করে দেন।

শব্দবাজি বন্ধ এবং আদালতের নির্দেশ মেনে বাজি পোড়ানোর দাবিতে মিছিল করেছিল ‘দূষণ বিরোধী নাগরিক উদ্যোগ’। তাদের তরফে জানানো হয়, সিঙ্গুর, হরিপা‌ল, তারকেশ্বরের মতো গ্রামীণ এলাকা এবং বিভিন্ন শহরের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় শব্দবাজি ফেটেছে বলে তাঁদের কাছে খবর আসে। কোথাও কোথাও চকলেট বোমা কম ফাটলেও আকাশে গিয়ে ফাটে, এমন আতসবাজি প্রচুর পোড়ানো হয়েছে।

সংগঠনের বক্তব্য, শুধুমাত্র কালীপুজোর সময়েই শব্দবাজি বন্ধে পুলিশ-প্রশাসন কিছুটা তৎপর হয়। কিন্তু এতটা দেরিতে এই কাজ শুরু হয়, যাতে কাজের কাজ হয় না। সারা বছর গুরুত্ব সহকারে এই কাজ করা দরকার। নাগরিক সংগঠন ‘অল বেঙ্গল সিটিজেন্স’ ফোরামের সভাপতি, কোন্নগরের বাসিন্দা শৈলেন পর্বত বলেন, ‘‘আমাদের আশপাশে প্রচুর বাজি ফেটেছে। গঙ্গার ওপারে পানিহাটি, ব্যারাকপুর, বেলঘরিয়াতেও তাই। বুধবারেও সন্ধ্যা থেকে রিষড়া, হিন্দমোটরের কিছু জায়গায় শব্দবাজি ফাটতে শুরু করে।’’ পেশায় আইনজীবী শৈলেনবাবুর ক্ষোভ, ‘‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষিত হল। সময়সীমা কোথাও মানা হয়নি। শব্দের তাণ্ডবও বন্ধ হয়নি। প্রশাসন তৎপর নয় বলেই এমনটা হল।’’

পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সাধারণ মানুষেরও। অভিযোগ, বিচ্ছিন্ন ভাবে পুলিশ কিছু পদক্ষেপ করলেও সামগ্রিক ভাবে পুলিশ ততটা সক্রিয় ছিল না। কোথাও কোথাও থানায় ফোন করেও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। হরিপালের একটি জায়গায় রীতিমতো পোস্টার সেঁটে বাজি প্রতিযোগিতার প্রচার করা হয় বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার রাতেই চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার দাবি করেছিলেন, বাজি নিয়ে ছোটখাটো কিছু অভিযোগে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবু্ মাঝরাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটায় পরিবেশপ্রেমীরা ক্ষুব্ধ। সুপ্রিম কোর্ট এ বার নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দিয়েছিল, যে অঞ্চলে বাজি ফাটবে, সেই অঞ্চলের ওসিদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির দায় বর্তাবে। সেই প্রসঙ্গে তুলে বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ প্রশাসনের যে বড়কর্তারা তাঁদের অধস্তনদের দিয়ে কাজ করাতে পারলেন না, দায় তো তাঁদেরও।’’

Sound Pollution Fire Crackers Pollution Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy