Advertisement
E-Paper

মশারি টাঙিয়েই স্কুলে পড়ার পাঠ

বিদ্যালয়ের চারপাশ ঝোপঝাড় এবং বাঁশ গাছে ভর্তি। বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে দু’টি খাল ও দু’টি ডোবা। সংস্কারের অভাবে সেগুলির হাল শোচনীয়। এর ফলেই মশার এমন বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করেন শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা।

সুব্রত জানা 

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৯
রক্ষা: মশারির ভিতরে বসেই পড়া শুনছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

রক্ষা: মশারির ভিতরে বসেই পড়া শুনছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

মশার জ্বালায় অস্থির পড়ুয়ারা। ক্লাস ঘরে মশা তাড়ানোর ধূপ জ্বালিয়েও টেকা যাচ্ছে না। উপায় না দেখে অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পড়ুয়াদের মশারির ভিতরে বসিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন তাঁরা। উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের তুলসীবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে কিশোরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।

বিদ্যালয়ের চারপাশ ঝোপঝাড় এবং বাঁশ গাছে ভর্তি। বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে দু’টি খাল ও দু’টি ডোবা। সংস্কারের অভাবে সেগুলির হাল শোচনীয়। এর ফলেই মশার এমন বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করেন শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিডিও এবং পঞ্চায়েতকে বিষয়টি বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

কিশোরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৫৪। এছাড়া রয়েছেন দু’জন শিক্ষক এবং একজন শিক্ষিকা। স্কুলে গিয়ে দেখা গেল পড়ুয়ারা মশারির ভিতরে বসে পড়াশোনা করছে। সকালবেলাতেও জানলা বন্ধ। ইলেকট্রিকের আলো জ্বলছে। শিক্ষকেরা জানালেন জানলা খুলে রাখলেই মশা ঢুকবে। তাই এমন ব্যবস্থা। লোডশেডিং হলেও জানলা না খুলে মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা চলে। কিশোরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মীকান্ত দেঁড়ে বলেন, ‘‘মশার জ্বালায় অস্থির হয়ে যেতে হয়। মশা তাড়ানোর ধূপ জ্বেলে ক্লাস করাচ্ছিলাম। কিন্তু তাতেও মশার উপদ্রপ থেকে রেহাই নেই।’’ লক্ষ্মীকান্ত আরও বলেন, ‘‘যে ভাবে চারিদিকে ডেঙ্গি এবং অন্যান্য মশাবাহিত রোগ হচ্ছে, তাতে ভয় হয় কে কখন রোগে পড়ে যাবে।’’

শিক্ষকরা জানালেন, স্কুলঘরের পাশেই বাঁশবন আর ডোবা। বর্ষায় জমা জলে সেখানে মশা জন্মাচ্ছে। বাঁশ গাছগুলি বেড়ে ক্রমশ স্কুল ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। তাঁদের অভিযোগ, যে জমিতে বাঁশ গাছ আছে, সেই জমির মালিককে বারবারে বাঁশ কাটার জন্য বলা হলেও তিনি শোনেননি। স্কুলের তরফে পঞ্চায়েতের প্রধানকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।

কিশোরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক হরেন্দ্রনাথ খাঁড়া বলেন, ‘‘সরকার ডেঙ্গু রোধ করতে বার বার প্রচার করছে। কিন্তু এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত বা বিডিও একেবারেই উদ্যোগী নয়। মশা মারার তেল ছড়ানো, বনজঙ্গল পরিষ্কার করা বা জমা জল পরিষ্কারের মতো কোনও কাজই হয় না।’’

স্কুলের আর এক শিক্ষক মদনমোহন কাজি ও শিক্ষিকা সুনন্দা রায় দাস বলেন, ‘‘আমরা মশা তাড়ানোর ধূপ কিনে ক্লাস নিতাম। তাতে খুব একটা সুরাহা হয় না। তাছাড়া দীর্ঘক্ষণ মশার ধূপ জ্বালানো পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল নয়। তাই আমরা মশারি কিনেছি। এখন পড়ুয়াদের মশারির ভিতরে বসিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়।’’

তুলসীবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অশ্বিনী মালিক বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। ব্যস্ততার কারণে খোঁজ নিতে পারিনি। খুব শীঘ্রই ওই স্কুলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে ব্যবস্থা নেব।’’

উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের বিডিও নিশীথ কুমার মাহাতো বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে দেখব। কেন ওখানে মশা মারার তেল ছড়ানো বা জমা জল পরিষ্কার করা হয়নি তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

Mosquito Uluberia Mosquito Net
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy