Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জামাইয়ের মুখ বেঁধে ডাকাতি

বীরভূমের বোলপুরের বাসিন্দা বীরেনবাবু তাঁদের জানিয়েছেন, রবিবার গভীর রাতে হঠাৎ বাইরে আওয়াজ শুনে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি দরজা খুলে বাড়ির বাইরে বেরোনোর আগেই ঘরের আলো নিভে যায়। তিনি বাইরে বেরোতেই চার জন যুবক তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

তছনছ: ডাকাতির পর। লিলুয়ায়। নিজস্ব চিত্র

তছনছ: ডাকাতির পর। লিলুয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
লিলুয়া শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১২
Share: Save:

এক ব্যক্তিকে মারধর করে বেঁধে রেখে বাড়িতে রাখা কয়েক লক্ষ টাকা ডাকাতির অভিযোগ উঠল। রবিবার রাতে, হাওড়ার লিলুয়ার ভূতবাগানের ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ বারুই নিজের জমি বিক্রির ১১ লক্ষ টাকা বাড়িতে রেখে সস্ত্রীক চাকদহ বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়ি পাহারার দায়িত্ব ছিল তাঁর মেজ জামাই বীরেন চৌধুরীর উপরে।

পুলিশ জানায়, আদপে বীরভূমের বোলপুরের বাসিন্দা বীরেনবাবু তাঁদের জানিয়েছেন, রবিবার গভীর রাতে হঠাৎ বাইরে আওয়াজ শুনে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি দরজা খুলে বাড়ির বাইরে বেরোনোর আগেই ঘরের আলো নিভে যায়। তিনি বাইরে বেরোতেই চার জন যুবক তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বীরেনবাবুর দাবি, প্রথমে গামছা দিয়ে মুখ-চোখ বেঁধে দিয়ে তাঁকে মারতে মারতে ঘরে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তাঁকে বিছানায় ফেলে দিয়ে পিঠের উপরে চেপে বসে এক দুষ্কৃতী। আলমারি, ড্রেসিং টেবিল খুলে জিনিসপত্র তছনছ করে ব্যাগ থেকে সমস্ত টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তারা।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাষবাবু ওই এলাকাতেই ১৫ কাঠা জমি কিনেছিলেন। সেই জমির কিছুটা অংশ আগেই বিক্রি করে পাওয়া টাকা বিবাহিতা তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়েকে দিয়েছেন বাড়ি করার জন্য। ইচ্ছে ছিল, বাকি জমি বিক্রির টাকায় পাকা বাড়ি তৈরি করে বড় মেয়েকে দেবেন এবং তাঁর কাছেই শেষ জীবন কাটাবেন।

গত সপ্তাহে সুভাষবাবু শেষ জমিটুকু বিক্রি করে পাওয়া টাকা বাড়িতে রেখে সস্ত্রীক বেড়াতে যান। বাড়ি পাহারার দায়িত্ব দিয়ে যান বীরেনকে। সোমবার সকালে বাড়ি ফিরে তিনি ডাকাতির কথা জানতে পারেন। সোমবার খবর পেয়ে তদন্তে আসে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, সুভাষবাবুর একটি গেঞ্জি তৈরির কারখানা রয়েছে। তাঁর তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দুই মেয়েকে জমি বিক্রি করে বাড়ি করার টাকা দিয়েছিলেন আগেই। সেই টাকায় মেজ মেয়ে আর জামাইকে নিজের বাড়ির কাছেই জমি কিনে বাড়ি করে দিয়েছেন। মেজ জামাইকে নিজের গেঞ্জি কারখানায় কাজও দিয়েছেন।

এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার এক মাত্র সাক্ষী বীরেনবাবু শুয়ে রয়েছেন বিছানায়। তিনি বলেন, ‘‘ডাকাতরা ঘরে ঢুকেই আমাকে মারতে মারতে বলেছিল, ‘১২ লক্ষ টাকা আছে দিয়ে দে, না হলে মেরে ফেলব।’ তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম ওরা সব খবর নিয়েই এসেছে।’’

কিন্তু গৃহকর্তা সুভাষবাবু কেন এত টাকা বাড়িতে রেখে দিয়ে বেড়াতে চলে গেলেন? সুভাষবাবুর জবাব, ‘‘আগেও জমি বিক্রি করে আরও বেশি টাকা বাড়িতে রেখেছিলাম। তখন কিছুই হয়নি। তাই এ বারও নিশ্চিন্তে রেখে গিয়েছিলাম। কিন্তু এমনটা যে হতে পারে ভাবতেই পারিনি।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে পরিচিত কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পরিবারের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Robbery Liluah লিলুয়া
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE