Advertisement
E-Paper

বধিরতাও আসতে পারে, শোনে কে?

নব্বইয়ের দশকে কলকাতা হাইকোর্ট ডিজে বক্সকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরে রাজ্য সরকারের তরফেও বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিষ্কার জানানো হয়, কোথাও ডিজে বাজানোর অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু নির্দেশ আটকে রয়েছে কাগজে-কলমে। ডিজের দাপট বেড়েছে বই কমেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪৩
এই ডিজে-র জন্য মানুষ অসুস্থও হতে পারেন। প্রতীকী চিত্র।

এই ডিজে-র জন্য মানুষ অসুস্থও হতে পারেন। প্রতীকী চিত্র।

আইন আছে। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। কিন্তু প্রয়োগ নেই। তাই বন্ধ হয় না ডিজে-র দৌরাত্ম্য, অভিযোগ এমনই।
শব্দ দূষণ নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের মতে, ডিজে থেকে যে পরিমাণ শব্দ উৎপন্ন হয়, তা ২০০০ সালের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রক আইনে উল্লেখ করা সর্বোচ্চ সীমার তুলনায় অনেক বেশি। নব্বইয়ের দশকে কলকাতা হাইকোর্ট ডিজে বক্সকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরে রাজ্য সরকারের তরফেও বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিষ্কার জানানো হয়, কোথাও ডিজে বাজানোর অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু নির্দেশ আটকে রয়েছে কাগজে-কলমে। ডিজের দাপট বেড়েছে বই কমেনি।

সাধারণ মানুষ থেকে বিশেষজ্ঞরা এ জন্য পুলিশ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে দুষছেন। তাঁদের বক্তব্য, দু’একটি ক্ষেত্র ছাড়া ডিজে বাজেয়াপ্ত করা হয় না বললেই চলে। সেই কারণেই যথেচ্ছ ভাবে ডিজে বাজে। পুলিশ আমল দেয় না। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলেও অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের তরফে অজুহাত দেওয়া হয় যে, উৎসব-অনুষ্ঠানে বহু মানুষ থাকেন। তাই অভিযান চালানো হলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। কিন্তু যাঁরা ডিজে ভাড়া দিচ্ছেন বা বাজাচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে পরে কেন কড়া ধারায় মামলা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, পরিবেশকর্মীরা সেই প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই উৎসবের আগে পুলিশের তরফে বৈঠকে ডিজে বাজানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু বাস্তবে তা করা হয় না। সেই কারণে, উদ্যোক্তারা মনে করেন, এগুলো কথার কথা। তাই ডিজে বন্ধের কথা তাঁরা ভাবেনই না।

পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘পুলিশ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে ডিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু আইন কেন কার্যকর হয় না, জানি না। ডিজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, এমনকি মারাও গিয়েছেন, এমন উদাহরণও আছে। তাই অসুবিধা হলেও অনেকেই ডিজে-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সাহস পান না।’’

আতঙ্কের ডিজে

• ৮০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ টানা ৬-৭ ঘণ্টা কানে গেলে সাময়িক বধিরতা আসতে পারে
• এমনটা চলতে থাকলে স্থায়ীভাবেও কেউ বধির হয়ে যেতে পারেন।
• ডিজের শব্দে শ্রবণ স্নায়ুকোষ বিকল হয়ে এই সমস্যা হয়।

অথচ, এই ডিজে-র জন্য মানুষ অসুস্থও হতে পারেন। ইএনটি (নাক-কান-গলা) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নীলাদ্রি দত্তের মতে, ‘‘ডিজের প্রচণ্ড শব্দে শ্রবণ স্নায়ুকোষ বিকল হয়ে সাময়িক বা স্থায়ী বধিরতা আসতে পারে। অর্থাৎ, কানের জন্য ডিজের আওয়াজ বিপজ্জনক।’’
টনক নড়ে না ডিজে-প্রেমীদের। সামাজিক উৎসবে ভ্যান বা ম্যাটাডরে সার দিয়ে ডিজে বক্স বেঁধে তারস্বরে গান চালানো হয়। উদ্দাম নেচে চলেন যুবক-যুবতীরা। কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা। চেনা ছবিটা পাল্টায় না।

deafness
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy