সফল করতে উলুবেড়িয়ায় মিছিল বিজেপির।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা। দলের তিন কাউন্সিলর-সহ এক দল তৃণমূল কর্মী ঢুকলেন শ্রীরামপুরের মাহেশের শহিদ বাজারে। হাতে দলীয় পতাকা। বিক্রেতাদের বলা হল, প্রত্যেকে যেন বুধবার দোকান খোলেন। কিছুক্ষণ পরে অটো নিয়ে বিজেপির তরফে প্রচার করা হল। তাদের আর্জি— সবাই যেন দোকান বন্ধ রাখেন।
শ্রীরামপুর শুধু নয়, মঙ্গলবার দিনভর হুগলি বা গ্রামীণ হাওড়া জুড়ে এমনটাই চলল। আজ, বুধবারের বন্ধের সমর্থনে প্রচার করলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বন্ধ ব্যর্থ করতে মিছিল-মিটিং করল শাসক দল তৃণমূল। দু’পক্ষের সুরই বেশ চড়া! এর মাঝে আজ রাস্তায় বেরনো নিয়ে কী ভাবছেন সাধারণ মানুষ, প্রশ্ন সেটাই। পুলিশ-প্রশাসন বলছে, জোর করে বন্ধের চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করা হবে।
হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ এবং চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের দাবি, বনধ্ মোকাবিলায় প্রতি থানায় বাড়তি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। সড়ক পথে টহল চলবে। বিভিন্ন স্টেশনে রেল পুলিশের সঙ্গে জেলা পুলিশ যৌথভাবে কাজ করবে। গ্রামীণ এলাকায় সিঙ্গুর, হরিপাল, মগরা, আরামবাগে পুলিশ বাড়তি সর্তকতা নিচ্ছে। পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘জোর করে বনধ্ করতে গেলে পুলিশ তা হতে দেবে না।’’ চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘সড়ক ও রেলপথ আটকানোর চেষ্টা হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা পুলিশ করবে।’’
বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পাল বলেন, ‘‘ইসলামপুরে দু’টো তরতাজা ছেলেকে গুলি করে মারল পুলিশ। হুগলির মানুষ নিশ্চয়ই এই নক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ করে বন্ধ সফল করবেন।’’ বিজেপি সূত্রের দাবি, পুরশুড়া, গোঘাট, আরামবাগ, পান্ডুয়া-সহ নানা জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়ে বনধ্ সফল করার আবেদন জানানো হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মীদেরও একই আবাদেন করা হয়।
পক্ষান্তরে, জনজীবন সচল রাখার আর্জি জানিয়ে এ দিন জেলার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল মিছিল করে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘দলের কর্মীদের বলেছি কোনও প্ররোচনায় পা না দিতে। তবে কেউ যদি মনে করেন জোর করে কিছু করবেন, তার ফল কিন্তু ভুগতে হবে।’’
বন্ধের প্রতিবাদে সিমলাগড়ে মিছিল তৃণমূলের
প্রশাসন সূত্রের খবর, পথে বেরিয়ে মানুষ সমস্যায় পড়লে যোগাযোগের জন্য পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের তরফে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। জেলার আঞ্চলিক পরিবহন অধিকর্তা শুভেন্দুশেখর দাস বলেন, ‘‘যাত্রী পরিষেবা সচল রাখতে গাড়ি মালিকদের আবেদন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত গাড়ি চলবে।’’ তবে বন্ধের আবহে অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা বাতিল করেছেন বলে জানা গিয়েছে। কিছু স্কুলে ছুটি ঘোষণা
করা হয়েছে।
অন্য দিকে, গ্রামীণ হাওড়ায় জনজীবন সচল রাখতে পুলিশের তরফে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘সর্বত্র পুলিশ সজাগ দৃষ্টি রাখবে। সিসিটিভির মাধ্যমেও নজর রাখা হবে। জোর করে জনজীবন স্তব্ধ করার চেষ্টা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলার সর্বত্র বাস চলবে বলে জানিয়েছেন জেলা বাসমালিক সমন্বয় সমিতির সভাপতি অসিম পন্ডিত। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, বাধা পেলে পুলিশকে জানাতে।’’ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে প্রতি দিন প্রায় দেড়শো বাস হাওড়া ও কলকাতায় যাতায়াত করে। সব বাস চলবে বলে জানিয়েছেন ইন্ট্রা অ্যান্ড ইন্টার বাস অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য কমিটির সদস্য প্রভাত পান।
তৃণমূলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘বন্ধ ব্যর্থ করার আবেদন জানিয়ে আমরা পিকেটিং, মিছিল করব।’’ সদর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘কর্মনাশা এই বন্ধ সাধারণ মানুষই রুখে দেবেন।’’ বিজেপির গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বন্ধে করার পক্ষপাতী। কিন্তু জোর করে বন্ধ ব্যর্থ করার চেষ্টা করা হলে প্রতিরোধ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy